কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো: দেবহাটার হাদীপুর-শ^শান ঘাট সড়কে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এই অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ইউএনও বিষয়টি তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, হাদীপুর মাদ্রাসা থেকে শ^শান ঘাট পর্যন্ত ৯৭৫ মিটার এবং সখিপুর আরএন্ডএইচ থেকে কেয়ার রোড পর্যন্ত ৬৮৫ মিটার রাস্তা পিচ করার জন্য একটি প্যাকেজে মোট ৫৪ লক্ষ ৭৮ হাজার ১৮৫ টাকার কাজ বরাদ্দ করা হয়। এলজিইডির আওতায় রাস্তা দুটির কাজ পায় দেবহাটা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের আবুল কালাম। আবুল কালামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স সালেহা এন্টারপ্রাইজ। মেসার্স সালেহা এন্টারপ্রাইজ কাজটি পাওয়ার পরে কিছুদিন পূর্বে থেকে কাজ শুরু করে। দরপত্র অনুযায়ী কাজ শুরুর তারিখ ১১-০৪-১৯ এবং কাজ শেষ করার তারিখ ০২-০৭-১৯ ইং। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নিন্মমানের ইটের খোয়া এবং অন্যান্য নিন্মমানের সরঞ্জামাদি দিয়ে কাজ শুরু করলে স্থানীয়রা বিষয়টির বিষয়ে ঠিকাদার আবুল কালামকে জানায়। কিন্তু আবুল কালাম এলাকাবাসীর কথায় কোন ভ্রুক্ষেপ না করে স্থানীয় এলজিইডি অফিসকে ম্যানেজ করে পূর্বের মতো ফাকি দিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কাজ শুরু করে। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম ও জেলা এলজিইডির ইঞ্জিনিয়ারকে জানান। যার কারণে জেলা এলজিইডির ইঞ্জিনিয়ার গত জ্জ দিন আগে ঐ রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং রাস্তার কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের সত্যতা পান। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি অদৃশ্য কারণে ঐ রাস্তার কাজ এখনো পর্যন্ত যেভাবে করা ছিল সেভাবেই রেখেছে। বৃহষ্পতিবার ঐ রাস্তায় সাংবাদিকরা গেলে স্থানীয়রা মানুষজন হাতের নখ দিয়ে রাস্তা খুড়ে খুড়ে দেখান। সেখানে দেখা যায়, নখ দিয়ে খুড়লে রাস্তার পিচসহ উঠে আসছে। এসময় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, “আমাদের রাস্তা ঠিক হোক বা না হোক ঐ ঠিকাদারের একটি ছবিসহ আমরা রাস্তায় টানিয়ে রাখতে চাই যাতে সবাই জানতে পারে যে রাস্তাটি কার তৈরি করা।” ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী আবুল কালাম বলেন, “কেরোসিন বেশি পড়ে যাওয়ায় ও রাস্তার নিজে গরুর গোবর থাকায় স্থানীয় লোকজন কুবুদ্ধি করে আমার বিরুদ্ধে কাজ করছে।” এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম জানান, “রাস্তার যেখানে খারাপ করা হয়েছে সেখানে সেখানে রাস্তা ঠিক করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।” কিন্তু এলজিইডির তত্ত্বাবধানে এই ধরনের অনিয়মের মধ্যে কাজ কিভাবে করে তার কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন রাস্তার কাজে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন স্বীকার করে জানান, এ বিষয়ে এলজিইডির সংশ্লিষ্টদেরকে জানিয়েছেন এবং তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।