সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব নিয়ে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা ও বক্তব্যে পরিপ্রেক্ষিতে প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে সংগঠনের নিজস্ব প্যাডে একটি বিবৃতি পাঠানো হয়েছে। বিবৃতিটি ডেইলি সাতক্ষীর’র পাঠকদের জন্য হবহু প্রকাশ করা হলো-
“আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি একটি মহল সাতক্ষীরার সাংবাদিকদের ঐতিহ্যবাহি প্রতিষ্ঠান সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব নিয়ে বিভিন্ন ধরণের মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। এ ব্যাপারে গত ৮ জুন ২০১৯ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় একটি বিবৃতি প্রদানে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
গত ৩০ জুন ২০১৯ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অতর্কিত হামলা করে একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী। কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হামলাকারীদের একটি অংশ প্রথমে প্রেসক্লাবে প্রবেশ করে সিসিটিভির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং পিছনের দরজা খুলে দেয়। আর একটি অংশ অতিথি কক্ষে অবস্থানরত সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, প্রথম আলোর কল্যাণ ব্যানার্জি, চ্যানেল আই ও পত্রদূতের আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল জলিল, আব্দুল বারীসহ অন্যদের উপর হামলা ও মারপিট শুরু করে। হামলাকারী ছাড়া ঘটনার সময় সন্ত্রাসীদের আরো একটি অংশ প্রেসক্লাবের সামনের চত্বরে অবস্থান নেয়। অপর একটি অংশ সাতক্ষীরা সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির ভাই মীর মাহামুদ আলী লাকী ও মাহী আলমের নেতৃত্বে প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক ও শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে অবস্থান নেয়। হামলায় নেতৃত্ব প্রদানকারীদের একটি অংশ প্রকাশ্যে লাঠি সোটা, ক্রিকেটের স্ট্যাম্প, হাতুড়ি নিয়ে এবং আর একটি অংশ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয়। হামলাকারীদের ৩/৪জন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্য পদ বাতিল হওয়া সাংবাদিক ছিল। দীর্ঘ সময় ধরে এই হামলা পরিচালিত হলেও বারবার পুলিশকে জানানোর পর ঘটনার ৪০/৪৫ মিনিট পর মাত্র ৫০/৬০ গজ দুরে অবস্থিত সাতক্ষীরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। এর পরপরই জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ও পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান ঘটনাস্থল সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে ঘটনার জন্য নিন্দা ও আহত সাংবাদিকদের সমবেদনা জানান।
এই ঘটনার পূর্বে গত এক বছরের অধিক সময় ধরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক ব্যবহারের কারণে সাতক্ষীরা সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির সাথে দুরত্বের সৃষ্ঠি হয়। গত ১৮ অক্টোবর ২০১৮ শারদীয় দূর্গাপুজা উপলক্ষে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব আয়োজিত “দূর্গোৎসবে বাংলাদেশ, সম্প্রীতির সেতুবন্ধন” শীর্ষক অনুষ্ঠানে ঐ সময় তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণে রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ হলভর্তি অতিথিদের সামনে চরম অসৌজন্যতামূলক আচরণ করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। প্রেসক্লাব আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাননীয় সংসদ সদস্যের এই আচরণে সাংবাদিকসহ উপস্থিত অন্যান্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে বেশ কিছুদিন তিনি আর প্রেসক্লাবে আসেন নি। গত ১৯ মার্চ ২০১৯ তারিখে দৈনিক ভোরের ডাকের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পুনরায় মাননীয় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আমন্ত্রিত হন। অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময় বেলা ১১টায় হলেও ২ মিনিট পূর্বে তিনি সরাসরি প্রেসক্লাবের হলরুমে প্রবেশ করে নিজে হাতে জন্মদিনের কেকটির প্যাকেটটি ছিড়ে কাটতে শুরু করলে উপস্থিত মাত্র ৪/৫ জন সাংবাদিকের দুই একজন প্রেসক্লাবের বিভিন্ন রুমে অবস্থানরত সাংবাদিকসহ অন্যান্য অতিথিরা দুই এক মিনিটের মধ্যে পৌছাবেন বললে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করে কেক কেটে ১১টা ১ মিনিটে প্রেসক্লাব ত্যাগ করেন। এ ঘটনার ৪/৫ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রেসক্লাবে পৌছান এবং মাননীয় সংসদ সদস্যের এই আচরণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে আয়োজক দৈনিক ভোরের ডাকের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মোহম্মদ আলী সুজন আরো একটি কেক এনে পুনরায় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেন। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় উপস্থিত সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহম্মদ আবু সায়ীদকে। অনুষ্ঠানের বক্তারা মাননীয় সংসদ সদস্যের উক্ত আচরণের তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কিছু পর উক্ত ঘটনাসহ পত্রিকায় ঐ দিন একটি খবর প্রকাশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে দিতে প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশ করে এবং প্রেসক্লাবসহ কয়েকটি পত্রিকা অফিস ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেয়। এরফলে সাংবাদিকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্ঠি হয়। একপর্যায়ে পরদিন ২০ মার্চ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের বিশেষ সাধারণ সভা ডেকে সর্বসম্মতিক্রমে মাননীয় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আর কোন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
উক্ত ঘটনার পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম গত ৩০ মার্চ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কর্মকর্তাদের সাথে মাননীয় সংসদ সদস্যের সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে বৈঠকে বসেন। কিন্তু সেই বৈঠকে ঢুকে পড়ে এমপি সমর্থক কয়েকজন যুবক প্রেসক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যদের উপর চড়াও হলে আলোচনার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়।
উক্ত ঘটনার পর সৃষ্ট পরিস্থিতির উন্নয়নে গত ৯ এপ্রিল সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আরো একটি বিশেষ সাধারণ সভা আহবান করা হয়। ঐ সভায় মাননীয় এমপির সাথে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিরসনে সিনিয়র সাংবাদিকদের সমন্বয়ে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ঐ কমিটির পক্ষ থেকে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও মাননীয় এমপি সাহেব চুড়ান্তভাবে সাংবাদিকদের বিভক্ত করার চেষ্ঠা শুরু করেন। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারসহ প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে একটি দরখাস্তে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যদের স্বাক্ষর করানো শুরু করেন। কিন্তু তিনি কমিটির (৭৫ জন সদস্যের ৫১% ভাগ) বিরুদ্ধে কাঙ্খিত সংখ্যক সদস্যের স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে পারেন নি। শহরের সিবি হসপিটালের ১০ তলায়, লেকভিউ ক্যাফে, মাননীয় এমপি সাহেবের বাসভবনে দফায় দফায় কিছু সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে তিনি তাদেরকে প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করার চেষ্টা করতে থাকেন। একপর্যায়ে সর্বমোট ২৭ জন স্বাক্ষরকারীর মধ্যে একজনের মধ্যস্থতায় দরখাস্তটি জমাও নেওয়া হয়। যদিও স্বাক্ষরকারীদের কয়েকজন তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বাক্ষর করানো হয়েছে মর্মে উল্লেখ করে পরবর্তীতে পৃথক পৃথক আবেদন করেন। এরই মধ্যে গত ২০ মে সাতক্ষীরা সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির নেতৃত্বে সাতক্ষীরা ইউনাইটেড ক্লাবের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভার পর দিন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের পুরাতন ভবনের দোতলায় অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত কক্ষ সিবি হসপিতালের এমডি ও ঐ ক্লাবের সভাপতি পরিচয় দিয়ে একেএম আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে সংস্কার করতে আসলে সাংবাদিকরা বাধা দেয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে সংস্কার কাজ বন্ধ করা হয়। গত ২৫ মে সিবি হসপিতালের এমডি একেএম আনিসুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঐ সম্পত্তিসহ প্রেসক্লাবের জমি ইউনাইডেট ক্লাবের বলে দাবী করেন এবং প্রেসক্লাবের স্বার্থ সংশ্লিষ্ঠ এই বিষয়ে কয়েকজন সাংবাদিক প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে একেএম আনিসুর রহমানের পক্ষে অবস্থান নেন। সংবাদ সম্মেলনের পরদিন পুনরায় ঐ কক্ষের সংস্কার কাজ শুরু করা হলে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ পুনরায় বাধা দেন এবং কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
এরপূর্বে গত ১৬ মে বেলা ২টা আড়াইটার দিকে প্রেসক্লাবের ২/৩ জন সদস্যের নেতৃত্বে ২৫/৩০ ব্যক্তি মহড়া দিতে দিতে একযোগে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে প্রবেশ করে। তারা প্রেসক্লাবের স্টাফদের সাথে দুর্ব্যবহার করে এবং একযোগে সদস্যপদের জন্য ২৩টি আবেদনপত্র জমা দেয়।
আবেদনকারীরা হলেন, জাকির হোসেন মিঠু বাঙালীর কণ্ঠ, জাহিদুর রহমান একুশের বানী, আবু সাইদ সংযোগ বাংলাদেশ, গাজী মোক্তার হোসেন সরেজমিন, মকসুমুল হাকিম সাপ্তাহিক ইচ্ছেনদী, এসএম রেজাউল ইসলাম গ্রামের কাগজ, মনিরুজ্জামান তুহিন এশিয়ান টিভি, স ম মশিউর রহমান ফিরোজ কালবেলা, মতিয়ার রহমান দি বাংলাদেশ টুডে, হাফিজুর রহমান নওয়াপাড়া, শহীদুল ইসলাম বঙ্গজননী, ফারুক রহমান শেয়ার বিজ, মনিরুজ্জামান মনি খুলনাঞ্চল, ডা. এটিএম রফিক-এম রফিক- এম ঈদুজ্জামান ইদ্রিশ কাফেলা, আকাশ ইসলাম জয়যাত্রা টিভি, আকতরুজ্জামান আমাদের কণ্ঠ, আমিনুর রশিদ সুজন সান, শাহ আলম আজকের সাতক্ষীরা, একেএম আনিসুর রহমান-আসাদুল ইসলাম-এসএম নাহিদ হোসেন সুপ্রভাত সাতক্ষীরা।
এরপর থেকে প্রেসক্লাবের কয়েকজন সদস্যের প্ররোচণায় উক্ত ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও তাদের সহযোগীরা প্রেসক্লাবে ঢুকে নিজেদেরকে প্রেসক্লাবের তথাকথিত “আবেদনকারী সদস্য” হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাধারণ সদস্যদের হুমকি ধামকিসহ এমপির পক্ষের লোক হিসেবে মহড়া দিয়ে নিজেদের জাহির করতে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে কতিপয় সদস্যের আবেদন এবং সার্বিক দিক বিবেচনা করে গত ২৯ মে ২০১৯ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভায় মাননীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে গত ২০ মার্চ গ্রহীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। একই সভায় প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকান্ড, তথাকথিত “আবেদনকারী সদস্য”দের নিয়ে প্রেসক্লাবে মহড়া দেওয়া, প্রেসক্লাবের পুরাতন ভবনের দোতলায় অবস্থিত পরিত্যাক্ত রুম দখলের চেষ্টায় সহায়তা ও অর্থ সংক্রান্ত গুরুতর অভিযোগে সর্বসম্মতিক্রমে ৪ জনের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ সিদ্ধান্তের চিঠি পাঠানোর পূর্বেই প্রেসক্লাবে এই বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটে।
এটা উল্লেখ করার মত বিষয় সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক প্রেসক্লাব থাকলেও সাতক্ষীরা জেলা শহরে রয়েছে একটি মাত্র প্রেসক্লাব। এটি জেলা শহরে কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকদের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৯ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর নানা সংকট বিভক্তি দ্বন্দ্বসহ বেশ কয়েকটি পর্বে এর ধারাবাহিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। সর্বশেষ গত ১০ বছরের প্রতি বছর নির্বাচনের মধ্যদিয়ে সংগঠনটির এক বছর মেয়াদী পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। জেলা প্রশাসক নিযুক্ত নির্বাচন কমিশন সংগঠনটির বার্ষিক নির্বাচন পরিচালনা করে থাকে। এই নির্বাচন হয় উৎসবমূখর। প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি হয় এই নির্বাচনকে ঘিরে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর একজন প্রভাবশালী রাজনীতিক প্রেসক্লাবের কমিটি নিয়ে তার ব্যক্তিগত পছন্দ অপন্দের বিষয়টি সামনে এনে সাংবাদিকদের মধ্যে তার পক্ষে একটি গ্রুপ সৃষ্টি করতে তৎপর হন বলে সাংবাদিকরা জানতে পারেন। ফলে বাইরের কোন প্রভাব ছাড়াই যাতে প্রেসক্লাব পরিচালিত হতে পারে সে জন্য ২০১৮ সালের নির্বাচনে (গত ইং ২৬/০১/১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত) প্রেসক্লাবের সকল পক্ষ ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই একটি প্যানেল জেলা প্রশাসক নিযুক্ত নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে সক্ষম হন। ফলে গঠিত হয় ঐক্যমতের কমিটি।
নতুন এই কমিটি গঠনের পর ঐ প্রভাবশালী রাজনীতিক শুরু করেন নতুন ষড়যন্ত্র। প্রেসক্লাবকে জামাত বিএনপির আখড়া হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বিভিন্ন সভা সমাবেশ ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে থাকেন। তার পক্ষের জামাত-বিএনপির সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এবং তার পক্ষে না থাকলে সবাই মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে এ ধরণের প্রচারণা চলতে থাকেন গত কিছু দিন ধরে।
প্রকৃত পক্ষে রাজনৈতিক পরিচয় দেখে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব কখনো কাউকে সদস্যপদ প্রদান করেনি। তারপরও সদস্যদের অধিকাংশই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বিভিন্ন মিডিয়ায় সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত। সভাপতি নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা। একই সাথে সাতক্ষীরায় মৌলবাদ ও সম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে এসেছে। এমনকি শহিদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বাধীন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, গণজাগারণ মঞ্চ, বাংলাদেশ রুখে দাড়াওসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বহু আন্দোলন সংগ্রামের সংগঠকও এই প্রেসক্লাবেরই সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ। ফলে তাদের রাজনৈতিক চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন অবকাশ আছে বলে আমরা মনে করি না।
সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে আমরা আশা করি এই বিবৃতির মধ্যদিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব নিয়ে মহল বিশেষের অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রয়াস বন্ধ হবে। প্রেসক্লাব কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিপক্ষ নয়। সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই দুর্নীতি অনিয়ম চাঁদাবাজী টেন্ডারবাজী কমিশন বানিজ্যের বিরুদ্ধে থেকে সাতক্ষীরার উন্নয়নে সকলের সাথে প্রেসক্লাব তার কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে চায়।”