দেশের খবর: ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় বিতর্কিত ভূমিকার জন্য সমালোচিত সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। তিনি যেন দেশ থেকে পালাতে না পারে সেজন্য ইমিগ্রেশন পুলিশ এবং সীমান্ত এলাকায় পুলিশ ও বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করায় হিলি ইমিগ্রেশন এবং সীমান্ত এলাকায় পুলিশ ও বিজিবির পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি হিলি ইমিগ্রেশনে এসে পৌঁছালে এই সতর্কতা জারি করা হয়।
হিলি ইমিগ্রেশনের ওসি ফিরোজ কবির বলেন, সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরই পুলিশের হেডকোর্য়াটার থেকে জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে আমাদের কাছে ওসি মোয়াজ্জেমের পাসপোর্ট নাম্বার দেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করেছি যাতে তিনি এই ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে কোনো মতেই ভারতে গমন করতে না পারেন।
তিনি আরও জানান, হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াতরত সব ধরনের পাসপোর্ট যাত্রীদের ছবি ওয়ান্টেডভুক্ত তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে তাদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরেই আসা-যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
তবে, ২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আবু নঈম খন্দকার জানান, ওসি মোয়াজ্জেমের দেশত্যাগের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা সর্ম্পকিত কোনো চিঠি বা পরিপত্র আমাদের কাছে আসে নি। তবে আমরা সবসময় সীমান্ত এলাকায় কঠোর অবস্থায় থাকি। কোনোক্রমেই দেশে অপরাধ করে কোনো অপরাধী অবৈধভাবে দেশত্যাগ করতে পারবে না।
গত ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যায় নুসরাত। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন। এর আগে গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় নুসরাত জাহান রাফিকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যান তিনি।
ওসি মোয়াজ্জেমের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পিবিআই। পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরোয়ানা জারির দুদিন পর মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। আবেদনটি এখনো হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আসেনি।