নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ ছয় বছর সাময়িক বহিস্কার থাকার পর প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছেন সাতক্ষীরা জেলা জামাতের সাবেক আমির ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় নেতা মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। তিনি সাতক্ষীরা সদরের আগরদাঁড়ি আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক এবং জামাতের খুলনা বিভাগীয় নায়েবে আমীর। তার বাড়ি সদরের ইন্দিরা গ্রামে।
বিএনপি-জামাত জোট ২০১৩ সালে ফেব্রুয়ারি সরকার বিরোধী আন্দোলন করা, আগরদাঁড়ি মাদ্রাসায় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া ইত্যাদি অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আবু আহম্মেদ একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের তদন্ত এবং মাদ্রাসার সভাপতি জেলা প্রশাসকের সুপারিশের প্রেক্ষিতে মুহাদ্দিস আব্দুল খালেকসহ কয়েক জনকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন নাশকতা ও সরকার বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করায় সাতক্ষীরার একাধিক মামলায় জড়িয়ে পড়েন মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। তখন থেকে তিনি পলাতক থাকেন।
এদিকে সরকার প্রদত্ত তার মূল বেতন ৩৫ হাজার টাকা। সাময়িক বহিস্কার থাকায় মূল বেতনের অর্ধেক ১৭ হাজার পাঁচশত টাকা ঐ সময় থেকে ব্যাংকের একটি এ্যাকাউন্টে জমা হতো বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। বাকী ১৭ হাজার পাঁচশত এবং অন্যান্য ভাতাদী সাসপেনশন এ্যালাউন্স হিসাবে তাকে প্রদান করা হতো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদ্রাসার গভর্নিং বডির একজন সদস্য জানান, নিয়ম অনুযায়ী সাসপেনশন এ্যালাউন্স বাদে বাকী টাকা মাদ্রাসার ফান্ডে থাকার বিধান থাকলেও মুহাদ্দিস আব্দুল খালেকের ক্ষেত্রে তা না করে মাদ্রাসার সভাপতি গোলাম মোর্শেদ ও অধ্যক্ষ আব্দুল সালাম কাশেমী আলাদা একটি এ্যাকাউন্ট খুলে সেখানেই নাকি ওই টাকা রাখতেন। কিন্তু বর্তমানে ওই এ্যাকাউন্টে তেমন কোন টাকা নেই।
অন্য একটি সূত্র জানায়, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক ২০১৩ সালে মামলার কারণে সাময়িক বহিস্কার হন। সেখান থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। ২/৩ মাস অন্তর গোপনে মাদ্রাসায় এসে বেতন বিল ও বিল রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করে যেতেন। ২০১৩ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ছয় বছরে ১৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জমা হওয়ার কথা। আর সাময়িক বহিস্কার প্রত্যাহার হলে তিনি একসঙ্গে ঐ টাকা চেকের মাধ্যমে পাবেন। কিন্তু টাকা রাখার ঐ এ্যাকাউন্টে কোন টাকা না থাকায় তিনি কীভাবে ঐ মোটা অংকের টাকা পেলেন তা নিয়ে বেশ গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
সূত্রটি প্রশ্ন রেখে জানায়, ওই টাকা কি আদৌ মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক পেয়েছেন নাকি অধ্যক্ষ, সভাপতি ও সহ-সভাপতি মিলে ভাগবাটোয়রা করে খেয়েছেন? সুত্রটি আরও জানায়, ১ জুলাই মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক যোগদান করেছেন। মাদ্রাসার সভাপতি গোলাম মোর্শেদ, সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হবি ও অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম যোগসাজসে ইচ্ছামতো টাকা তুলে তা আত্মসাৎ করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বলেন, আমি অসুস্থ। ২০দিন ভারতে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছি। মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক যোগদান করেছেন কীনা তা আমার জানার বাইরে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক সানপেনশনে থাকা অবস্থায় তার বেতনভাতার টাকা আলাদা একটি এ্যাকাউন্টে জমা রাখা হতো। সাসপেনশন প্রত্যাহারের পর তার টাকা পাওয়ার কথা।
মাদ্রাসার সভাপতি গোলাম মোর্শেদ জানান, তিন-চার দিন আগে মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক যোগদান করেছেন। এতদিন তিনি সাসপেনশনে ছিলেন। তার টাকা মাদরাসার এ্যাকাউন্টে জমা আছে। টাকা দেওয়া হবে।