খেলার খবর: ‘ওয়ান ম্যান শো’ কথাটা বেশ জনপ্রিয় হলেও ক্রিকেটে এর প্রয়োগ খুব কম। একা ম্যাচ জেতানো কয়জনের পক্ষে সম্ভব। ইমরান খান, কপিল দেব, যুবরাজ সিংরা দুই একটি টুর্নামেন্টে একাই স্পটলাইটের আলো কেড়ে নিয়েছেন। তবে বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে সত্যিকার অর্থে ‘ওয়ান ম্যান শো’ কতজন দেখাতে পেরেছেন?
‘ওয়ান ম্যান শো’ দেখালেন সাকিব আল হাসান। ৮ ইনিংসে ব্যাট হাতে ৬০৬ রান ও বলের ঘূর্ণিতে ১১ উইকেট। সাধেই কি আর ওয়ান ম্যান শো বলা হচ্ছে! এবারের বিশ্বকাপটা একান্ত নিজের করে নিলেন সাকিব। সতীর্থরা ব্যর্থ হওয়ায় এতো ভালো করেও গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে তাকে।
এবার সবাইকে ছাপিয়ে একাই নায়ক হয়ে ওঠেন সাকিব। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো তিনে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ থেকেই ব্যাটে-বলে মহীরুহ হয়ে ওঠেন। সাকিবের ব্যাটিং ইনিংসগুলো দেখুন: ৭৫, ৬৪, ১২১, ১২৪, ৪১, ৫১, ৬৬ ও ৬৪! মোট ৬০৬ রান করে বিশ্বকাপ মিশনটা শেষ করলেন তিনি। সাথে রয়েছে ১১ উইকেট।
ক্রিকেটে ও বিশ্বকাপে কে কবে এতো ভালো পারফরম্যান্স করেছিল সেটা ঘাটতে খুব একটা কষ্ট করতে হলো না। বিশ্বকাপের এক আসরে সবোর্চ্চ রানের রেকর্ডটা শচীন টেন্ডুলকারের। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে ভারতের ক্রিকেট ঈশ্বর করেন ৬৭৩ রান। সেবার ফাইনালসহ ১১ ম্যাচ খেলেন তিনি। গড় ৬১! ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি ও একটি সেঞ্চুরি। সেবার চার ম্যাচে বল করে দুই উইকেট নেন এই ব্যাটিং জিনিয়াস।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে শচীনের খুব কাছে চলে আসেন অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন। সেবার ১১ ম্যাচে তিনি করেন ৬৫৯ রান। তিনটি শতকের সঙ্গে একটি অর্ধশতক করেন অজি ব্যাটসম্যান।
পরিসংখ্যান ঘেটে ব্যাটে-বলে সাকিবের প্রতিপক্ষ পাওয়া গেল। তিনি হলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি গ্রেগ চ্যাপেল। কোনো একটি টুর্নামেন্টে সবোর্চ্চ রানের রেকর্ডটি গ্রেগ চ্যাপেলের। ১৯৮০-৮১ সালে অনুষ্ঠিত বেনসন অ্যান্ড হেজেস ট্রফিতে ১৪ ম্যাচে ৬৮৬ রান করেন গুরু গ্রেগ। সেবার বল হাতে ২২ উইকেটও নেন অজি কিংবদন্তি। ১৯৮৪-৮৫ সালে এই টুর্নামেন্টে ৬৫১ রান করেন স্যার ভিভ রিচার্ডস।
প্রশ্ন উঠেছে, শচীন ও হেইডেনের মতো আর দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে কোথায় গিয়ে থামতেন সাকিব? কিংবা গ্রেগ চ্যাপেলের মতো ১৪ ম্যচে খেলতে পারলে সাকিবের রান ও উইকেট সংখ্যাটা কত হতো?