নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোমরা- সাতক্ষীরা প্রধান সড়কের পাশেই অবস্থিত ভোমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে তৈরি দীর্ঘদিনের নর্দমাটি ব্যবসায়িদের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার হুমকিতে রয়েছে এখানকার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ। বর্ষকালে বর্ষা হলে এতক্ষণে বিদ্যালয়ের মাঠটি পানিতে থৈ থৈ করতো। পানি ঢুকে পড়তো শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকমণ্ডলীর বসার কক্ষে। বিকল্প ব্যবস্থা না হলে কিছুদিন বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় থাকতো না।
শনিবার সকালে সরেজমিনে ভোমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাজির হলে প্রধান শিক্ষক বিলকিস জাহান ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জিএম আমীর হামজা এসব কথা বলেন।
জিএম আমীর হামজা বলেন, ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এখানকার শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ফলাফল অনেক ভাল। গত বছরে পাশের হার শতভাগ। প্রতি বছর বৃত্তি পেয়ে থেকে কোন না কোন শিক্ষার্থী। চলতি বছরে ২০৩ জন শিক্ষার্থীর অনুকুলে আটজন শিক্ষক রয়েছে। এদের মধ্যে একজন ডেপুটেশনে। ন্যাশনাল সার্ভিসের রয়েছে দু’জন শিক্ষক।
তিনি জানান, ভোমরা- সাতক্ষীরা সড়কের তাদের বিদ্যালয়ের সামনে ও রাস্তার পূর্ব পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের নর্দমাটি অনেক চওড়া ছিল। ব্যবসায়িক কারণে রাস্তার দু’ পাশে জেলা পরিষদের জমিতে অনেক অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠার কারণে নর্দমাটি ক্রমশঃ সরু হতে থাকে। একপর্যায়ে বিদ্যালয়টির সামনে কালভাটের পাশে কচুরিপানায় ভরে যায়। ২০১৬ সালে জনৈক আক্তার হোসেন পানি কচুরিপানা সংলগ্ন নর্দমার অংশ জুড়ে স্টোনচিপ বিক্রির মাঠ তৈরি করেন। এলাকাবাসীর আপত্তি স্বত্বেও নর্দমা বন্ধ করে চলছে ব্যবসার কার্যক্রম। এরই পাশপাশি নাশকতা মামলার আসামী সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে ক্ষতাসীন দলের একাধিক নেতাকে ম্যানেজ করে নর্দমা ভরাট করে ২০১৭ সালে বসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে ভাড়া দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে এক লাখ টাকা খরচ করে তিনি বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করেছেন। এরপরও এ বছরের স্বল্প বৃষ্টিতে মাঠে পানি ওঠে। তবে আষাঢ় ও শ্রাবণে পর্যাপ্ত পানি হলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দুর্গতির শেষ থাকতো না। জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ হয়ে যেত শিক্ষা কার্যক্রম। বিষয়টি ইতিমধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। অবিলম্বে নর্দমা কাটার ব্যবস্থা না করলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে।
ভোমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিলকিস জাহান বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও প্রাচীর নির্মাণের জন্য তিনি ইতিমধ্যে কথা বলেছেন উর্দ্ধতন শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তারা ওই সব নির্মাণের ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি আশাবাদি যে, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সকলে আন্তরিক হয়ে নর্দমা সংস্কারের কাজে উদ্যোগী হবেন।
ভোমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জলাবদ্ধতার কবলে
পূর্ববর্তী পোস্ট