নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ার খোরদো বাওড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শচীন চন্দ্র বিশ্বাসের উপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে আশাশুনি- সাতক্ষীরা সড়কে খোরদো এলাকাবাসী এ কর্মসুচি পালন করে।
মানববন্ধন কর্মসুচি চলাকালে বক্তব্য দেন,খোরদো মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বাবুল বিশ^াস, সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির সদস্য সচীব অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, জাসদ নেতা সুধাংশু শেখর সরকার, মানবাধিকার কর্মী মাধব দত্ত, রঘুনাথ খাঁ, জেলা মন্দির সমিতির সহসভাপতি জিতেন্দ্রনাথ ঘোষ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল, সদর শাখার সভাপতি নিত্যানন্দ আমিন. সাবেক ইউপি সদস্য মাধুরী বিশ^াস, দুলাল চন্দ্র বিশ^াস প্রমুখ। এ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা নাগরিক মঞ্চের আহবায়ক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু।
বক্তারা বলেন, কলারোয়া উপাজেলার খোরদো মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ ১৩৫ বিঘা জমি নিয়ে ইজারা পায়। শচীন চন্দ্র বিশ্বাস ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমান সমিতির সদস্য ১১৪ জন। ২০১২ সালের ৩১ আগষ্ট আনোয়ারুল চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেলিনা আনোয়ারুল ময়নার নেতৃত্বে ওই বাওড়ের মাছ লুট করা হয়। বাধা দেওয়ায় আহত হন সমিতির পাঁচ সদস্য। পরবর্তীতে জবরদখলকারিদের হুমকির মুখে সমিতির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। এরপরও সেলিনা আনোয়ারুল ময়নার নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী মহল সমিতির সদস্যদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৩ মে খোরদো বাওড়ের একসনা বন্দোবস্ত পাওয়ার পর খাস কালেকশনের মাধ্যমে বাওড়ের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বন্দোবস্ত পাওয়ার পরপরই বাওড়ে মাছ ছাড়া সহ বিভিন্ন কার্যক্রম ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা আনোয়ারুল ময়না, খোরদো ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, জয়, রিপন, কুদ্দুসসহ একটি চাঁদাবাহ সন্ত্রাসী চক্র সমিতির সভাপতি বাবুল বিশ্বাস ও শচীন বিশ্বাসসহ কয়েকজন সদস্যের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। প্রতিকার চেয়ে বাবুল বিশ্বাস গত ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন। এ খবর জানতে পেরে ওই দিন রাত সাতটার দিকে খোরদো গ্রামের ব্রাক অফিসের সামনে মাসুমের চায়ের দোকানে বসে থাকাকালিন শচীন বিশ্বাসের কাছে দাবিকৃত চাঁদার টাকা চায় সেলিনা আনোয়ারুল ময়না, আব্দুল মান্নান, জয়, কুদ্দুস, রিপনসহ অজ্ঞাতনামা তিন জন। টাকার দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ওই সন্ত্রাসীরা শচীনকে লোহার রড দিয়ে ডান পায়ের হাঁটু ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ১৬ সেপ্টেম্বর শচীন বিশ্বাসের মেয়ে বিপ্রতি বিশ্বাস বাদি হয়ে সেলিনা আনোয়ারুল ময়না, মান্নানসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করে। ওইদিন ময়নাসহ দু’জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপরও আসামী ও তাদের লোকজন বাদি, তার পরিবারের সদস্য ও সমিতির সদস্যদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। বক্তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদেরঅবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
কলারোয়ায় মৎস্যজীবী উপর হামলায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
পূর্ববর্তী পোস্ট