রাজনীতির খবর: সদ্য বহিষ্কৃত যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান ছিলেন জামায়াত পরিবারের সদস্য। তার বাবা কাজী ফায়েক আলী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাবরাশুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের জামায়াতে ইসলামীর রুকন সদস্য।
কাজী ফায়েক আলী ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরি পান। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানে বন্দি ছিলেন। ১৯৭৪ সালে দেশে ফিরে এসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে স্থলাভিষিক্ত হন। সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর এলাকায় এসে জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তাদের আয় বলতে ছিল বাড়িতে একটি ধান ভানার মেশিন।
২০১১ সালে কাজী আনিস কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক পদ পাওয়ার পর পরিবারটির ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। একই সঙ্গে বাবার রাজনৈতিক পরিচয়ও ঢাকা পড়ে। ২০১৪ সালে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে মুকসুদপুর টেংরাখোলায় অবস্থিত মা ফিলিং স্টেশন নামে একটি পেট্রোল পাম্প স্থাপন করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোয়ালিয়া গ্রামের অনেকে জানান, কাজী ফায়েক তার ছেলে আনিস যুবলীগের পদ পাওয়ার আগেও মনেপ্রাণে জামায়াতে ইসলামীর আদর্শকে ভালোবাসতেন। চায়ের দোকানে বসলে জামায়াতের বিভিন্ন নেতার প্রশংসা করতেন। ওই গ্রামে তার সঙ্গে জামায়াত করা এক ব্যক্তি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কাজী ফায়েকের ছেলে যুবলীগের পদ পাওয়ার পর তিনি তাবলিগে চলে যান। সেই থেকে জামায়াতের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখেননি তিনি।
এ বিষয়ে কাজী ফায়েক আলী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে জামায়াত-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আর্মিতে ২৪ বছর চাকরি করে অবসর নিয়েছি। নিয়মিত তাবলিগ জামাতে যাই। এলাকায় সালিশ বিচারে অনেকের ন্যায়বিচার করেছি, অনেকের বিপক্ষে গেছে। এখন ছেলে বিপদে পড়েছে। বিরুদ্ধপক্ষ তারই সদ্ব্যবহার করছে।’
এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রজীবনে কাজী আনিস রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও কেন্দ্রীয় যুবলীগের অফিসে চাকরি নেন মাত্র চার হাজার টাকা বেতনে। যুবলীগ থেকে বহিষ্কারের পর এলাকায় তার বিরুদ্ধে অনেকে মুখ খুলতে শুরু করেছে। কাজী আনিসের সব অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও দাবি জানিয়েছেন তারা। সেই সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান।