স্বাস্থ্য ও ডেস্ক: ডায়াবেটিসের ভয়ে কিংবা ধরা পড়ার পরে অনেকেই ভাত ছেড়ে রুটি, পাউরুটি বা ওই জাতীয় আটা-ময়দার খাবারের খাওয়া শুরু করেন। অধিকাংশেরই একটা ধারণা রয়েছে, সুগার ধরা পড়লে ভাতের বদলে রুটি খেলেই শরীর সুস্থ সাথে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল আটা-ময়দার খাবারে থাকা গ্লুটেন ইনসুলিনের ক্ষরণ আরো বাড়িয়ে দেয়। দিনের পর দিন এমনটা চলতে থাকলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস মারাত্মক আকার নিতে পারে।
গমে থাকা গ্লুটেন নামক উপাদান হজম হতে অনেকটাই সময় নেয়। এই গ্লুটেন হজম হওয়া মানেই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ইনসুলিনের ক্ষরণও বেড়ে যায়। ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। সেই জন্যই যাদের পরিবারে ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন, চিকিৎসকেরা তাদের গমের তৈরি খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ‘আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আটা বা ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়ার পর শরীরে পরিপাক ক্রিয়ায় বেশ কিছু পরিবর্তন হয়। পরিপাক ক্রিয়ায় এই পরিবর্তনের প্রভাবে শরীরের বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ অনেকটাই বেড়ে যায়। এর ফলে মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশন, রক্তে সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, গমের তৈরি খাবার খেলে কোলেস্টেরলের সমস্যাও বৃদ্ধি পেতে পারে। তাছাড়া, গমের তৈরি খাদ্য উপাদান ত্বকের বয়সও বাড়িয়ে দেয়। ত্বক কুচকে যায়, বলিরেখা পাড়ে। এছাড়াও গমের তৈরি খাবার-দাবার বেশি পরিমাণে খেলে অকালে চুল ঝরে গিয়ে টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আটা-ময়দা দিয়ে তৈরি কোনো খাবার খেলে খাওয়ার পর শরীরে একদিকে যেমন শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়, তেমনি কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণও বাড়তে শুরু করে। ফলে ওজন বাড়তে শুরু করে। বেড়ে যায় উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও। তাহলে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তারা কী খাবেন? জোয়ার বা বাজরার আটা, সয়াবিনের দুধ, টক দই, ফ্যাট ফ্রি (চর্বি মুক্ত) দুধ, ডিম, মাছ (সামুদ্রিক মাছ বেশি নয়), মুরগির মাংস, যেকোনো ধরণের বাদাম, ব্রোকলি, ফুলকপি, পালং শাক, শশা, মটরশুটি, বাঁধাকপি, মাশরুম, গাজর ইত্যাদি।