নিজস্ব প্রতিনিধি: অনেক আশা নিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিল পিতা তৈয়েব আলী। সেই আশা পূরণও করেছিল রেশমার পরিবার। বিয়েকে ধুমধাম করে পারিবারিক ভাবে বিয়ে দেয় তারা। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে স্বামী জাহাঙ্গীর। পরিবারের মধ্যে নেমে আসে ঝড়। এক পর্যায়ে তৈয়েব আলীর মেয়ে রেশমাকে হত্যা করে স্বামী, শ^াশুড়ি ও স্বামীর বন্ধু। মামলাও হয়। কিন্তু স্ত্রী হত্যার দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও গ্রেফতার হয়নি ঘাতক স্বামী। ফলে এখনও ডুকরে ডুকরে কাঁদতে থাকে রেশমার পরিবার। এখন শুধু মেয়ে হত্যার বিচার দাবী করে নিজেদেরকে স্বান্তনা দিচ্ছে তারা। কিন্তু রেশমার ঘাতক স্বামীকে এখনও পুলিশ আটক করতে পারেনি। ঘাতক স্বামী কলারোয়া উপজেলার পাচপোতা গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। সে বর্তমানে গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। রেশমার পারিবারিক সূত্র জানায়, সদর উপজেলার বকচরা এলাকার তৈয়েব আলীর মেয়ে রেশমা বেগমের (২৫) সাথে কলারোয়া উপজেলার পাচপোতা গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে ঘাতক স্বামী মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের (২৮) হত্যার মাত্র আড়াই মাস পূর্বে পারিবারিক ভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর থেকেই রেশমাকে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন করতে থাকে তার স্বামী জাহাঙ্গীর ও শ^াশুড়ী আমেলা খাতুন (৫০)। এভাবেই আড়াই মাস চলতে থাকে গৃহবধু রেশমার উপর অমানুষিক নির্যাতন। আড়াই মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ১২ জুলাই রাতে যৌতুকে দাবীতে তাকে ব্যাপক নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই রাতেই তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে ঘাতক স্বামী ও শ^াশুড়ী। আর এ হত্যা কাজে সাহায্য করে আশাশুনি উপজেলার কাকড়াবুনিয়া এলাকার মৃত. হোসেন সানার ছেলে হাবিবুর সানা (৩৩)। হত্যার পর তারা লাশ হাসপতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এঘটনার পরদিন কলারোয়া থানার পুলিশ রেশমার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্টেও হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এঘটনার পর কলারোয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং- ১৬/১৮, তারিখ-১৩/০৭/১৮। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে রেশমার শ^াশুড়ি আমেলা খাতুনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করে। পরে সে জামিনে ছাড়া পায়। কিন্তু দীর্ঘ দেড় বছর পার হলেও এখনও আটক হয়নি ঘাতক স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেছে। রেশমার পরিবার ঘাতক জাহাঙ্গীরকে অবিলম্বে আটক করতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সাতক্ষীরায় যৌতুকে দাবিতে বিয়ের আড়াই মাস পরেই স্ত্রীকে হত্যা
পূর্ববর্তী পোস্ট