এমএ মামুন: ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। আর এই ঈদে ধনী-গরিব সবাই মিলে মিশে ঈদ উদযাপন করে থাকে। যেখানে ছোট ছোট শিশুদের থাকে নানা রকমের বায়না। ঈদের খুশি তাদের যেন আর ধরে না। যার কারেন ঈদের একমাস আগে থেকেই শিশুদের নতুন জামা-কাপর তৈরির জন্য অর্ডার দিতে হয়। সেই ঈদকে সামনে রেখে যেখানে সেলাই মেশিনের শব্দে মুখরিত হওয়ার কথা ছিল দেবহাটার দর্জি পল্লী। যেখানে দর্জি পল্লীর কারিগরদের দম ফেলার সময় থাকে না। আর মাত্র কয়েক দিন পর কুরবানীর ঈদ। তাই দর্জি পাড়ায় নতুন করে অর্ডার নেওয়ার সুযোগ থাকার কথা না। সেখান এবার অন্য চিত্র লক্ষ করা গেছে। বাজারে নিত্য নতুন গার্মেন্টস সামগ্রি সরবরাহ করায় কদর বেড়েছে রেডিমেট তৈরি পোশাক গুলোর। ভারত-বাংলাদেশের টিভির বিভিন্ন চ্যানেলের সিরিয়ালের পোশাক দেখে মন কেড়েছে দর্শকদের। আবার সে সকল পন্য বাজারে চাহিদা মুলক ভাবে কম দামে বিক্রয় করা হচ্ছে। চাহিদা মতো নতুন পোশাক পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। এদিকে দর্জি পাড়ায় বাড়ানো হয়েছে পোশাক তৈরির মজুরি- এ নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা অসন্তুষ্টি থাকলেও দু’এক জন পছন্দ মতো পোশাক বানাতে ছুটে যাচ্ছেন দর্জি পল্লীতে। টেইলার্স মালিকরা বলছেন, এক সময় পছন্দের পোশাকের জন্য রেডিমেড থ্রি-পিস ও থানকাপড় কিনে ক্রেতারা পাড়ি জমাতো দর্জি পাড়ায়। ক্রেতাদের পছন্দ মতো পোশাক বানাতে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা দোকান খোলা রেখে কাজ করেছি। ঈদুল ফিতরে শবে বরাতের আগে থেকে পোশাক কারিগরদের ছুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সরেজমিন দেখা গেছে, দেবহাটার ঈদগাহ বাজারস্থ সুরভী টেইলার্স, গাজী টেইলার্স, মাফরাফি টেইলার্স, মায়ের দোয়া টেইলার্সসহ বিভিন্ন টেইলার্সের কারিগরদের দু’একটি কাজ থাকলেও জমজমাট নেই বললেও চলে। তবে পাড়া-মহল্লার টেইলার্সে সামান্য ফিড় লক্ষ করা গেছে। সেখানে মহিলাদের থ্রিপিস ও ব্লাউজ বেশি তৈরি হতে দেখা গেছে। মায়ের দোয়া টেইলার্সের আবুল বাশার বলেন, ঈদকে সামনে রেখে তাদের যে ব্যস্ততা থাকার কথা সে রকম খুব একটা লক্ষ করা যাচ্ছে না। রমযানের ঈদে শবে বরাতের আগে থেকে ক্রেতারা ঈদের পোশাকের অর্ডার দিয়েছিলেন। ২৫ রমজানের পর আর অর্ডার নেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছরই টেইলার্স মালিকরা নতুন কারিগর নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এ বছরও রমজানের ঈদে তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু কোরবানীর ঈদে কারিগর নিয়োগ তো দুরের কথা নিজেদেরই বসে থাকতে হচ্ছে। কারিগরদের মজুরি, দোকান ভাড়া, সুতা ও বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় অর্ডারের মজুরি বাড়ানো হয়েছে। এজন্য ছেলেদের প্যান্ট-শার্টের অর্ডার গুলো খুব একটা লক্ষ করা যাচ্ছে না। দু’এক জন প্যান্ট-শার্ট নিচ্ছে তবে রেডিমেট তৈরি জিন্স,শাট, শর্ট পাঞ্জাবী কিনতে দেখা যাচ্ছে মার্কেট গুলোতে। এছাড়া কাপড়ের দোকানে যেয়ে দেখা যায়, বিশেষ করে সিল্ক জর্জেট, কাতান, লেলিন, বেনারসি কাপড়গুলো গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ক্রয় করছে। তবে অধিকাংশ দর্জিদের ধারনা রমজানের ঈদে মানুষের চাহিদা একটু বাড়তি থাকে এজন্য সকল দিক দিয়ে বাজার জমজমাট থাকে। কিন্তু কোরবানীর ঈদ রমজানের ঈদের প্রায় কাছাকাছি থাকায় কেনাকাটার চাহিদা কম। তবে বিশেষ করে কোরবানীর পশু ক্রয়ে ব্যস্ত থাকায় মধ্যবিত্তদের কেনাকাটার চাহিদা একটু কম।