দেশের খবর: অবশেষে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মেরুদণ্ডে হাঁটু দিয়ে আঘাত করে চাঞ্চল্যকর কৃষক নিখিল তালুকদার (৩৫) হত্যা মামলায় অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই (সহকারী উপ-পরিদর্শক) শামীম হাসান ও পুলিশ সোর্স মোঃ রেজাউলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান।
তিনি জানিয়েছেন, রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নিহতের ছোট ভাই মন্টু তালুকদার বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০১। ওই মামলায় কোটালীপাড়া থানার এএসআই (সহকারী উপ-পরিদর্শক) শামীম হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সহকারী উপ-পরিদর্শক শামীম হাসান ও পুলিশ সোর্স মোঃ রেজাউলকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে এ ঘটনায়।
গত মঙ্গলবার (০২ জুন ২০২০) বিকেলে রামশীল বাজারের ব্রিজের পূর্ব পাশে নিখিলসহ চারজন তাস খেলছিলেন। ওই সময় কোটালীপাড়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক শামীম হাসান একজন ভ্যান চালক ও একজন জন যুবককে নিয়ে সেখানে যান এবং আড়ালে দাঁড়িয়ে মোবাইলে তাস খেলার দৃশ্য ধারণ করেন। তাস খেলতে থাকা ওই চার ব্যক্তি যখন দেখতে পান তাদের খেলা মোবাইলে ধারণ করা হচ্ছে, তখন তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় অন্য তিন জন পালিয়ে গেলেও নিখিলকে শামীম হাসান ধরে মারপিট করতে থাকেন এবং হাঁটু দিয়ে পিঠে মেরুদণ্ডে আঘাত করেন। এতে নিখিলের মেরুদণ্ড তিন খণ্ড হয়ে যায়। আহতাবস্থায় স্বজনেরা তাকে প্রথমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে চিকিৎসক ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাঁর মৃত হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট বিভাগীয় তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন।
এদিকে গত শনিবার কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এ ঘটনায় একটি মীমাংসা বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার, পৌর মেয়র কামাল হোসেন, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, রামশীল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকন বালা ও কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ লুৎফর রহমানসহ এলাকার গণ্য ব্যক্তিরা ওই মীমাংসায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ওই বৈঠকে নিহত নিখিলের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা ও তার স্ত্রী ইতি তালুকদার এবং ছোট ভাই মন্টু তালুকদারকে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়।