আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনির পল্লীতে যুবক চন্দ্র শেখর হত্যার মূল আসামী অবশেষে পুলিশের খাচায় বন্দি হয়েছে। থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ গোলাম কবির জানান, উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বৈকারঝুটি শংকর সরকারের পুত্র চন্দ্র শেখর সরকার (২১)’র লাশ তার নিজ ঘের থেকে উদ্ধারের পর থেকে থানা পুলিশ ও জেলা পিবিআই’র একটি বিশেষ টিম এলাকায় সাড়াসী অভিযানে নামে। মঙ্গলবার বিকালে তিনি বিভিন্নভাবে ক্লু উদঘাটন পূর্বক পর্যায়ক্রমে ভিকটিমের বন্ধু মোবাশ্বির বা পার্শ্ববর্তী ৫/৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে নেয়। একের পর এক জিজ্ঞাসাবাদে যুবক চন্দ্র শেখর হত্যার মূল আসামী তার নিকটতম বন্ধু থানা হেফাজতে থাকা মোবাশ্বির হোসেন (২২) হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। মোবাশ্বির হোসেন ওই গ্রামের আব্দুল মজিদ মোড়লের পুত্র ভিকটিমের খুব নিকটতম বন্ধু। থানা পুলিশ জানান, চন্দ্র শেখরের লাশ উদ্ধার হওয়ার প্রায় দু’ঘন্টা পূর্বে মোবাশ্বির নিজ মুটোফোনে চন্দ্র শেখরের সিম ঢুকিয়ে ভিকটিমের পিতার মুটোফোনে তার ব্যবহৃত পোশাকসহ মোবাইল ফোন ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে ফেরত দেয়ার ম্যাসেজ পাঠায়। সে সূত্র ধরে জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্নবানে বিদ্ধ হয়ে মোবাশ্বির এক পর্যায়ে মঙ্গলবার রাতে চন্দ্র শেখরকে হত্যার সকল রহস্য স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক (ওসি) মোহাম্মাদ গোলাম কবির সঙ্গিয় ফোর্স নিয়ে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল, সিম, লুঙ্গি, গামছা পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করে। চন্দ্র শেখর হত্যার এক মাত্র আসামী মোবাশ্বির দু’বন্ধুর একই মেয়ের সঙ্গে প্রেম ঘটিত বিষয়ে হত্যা করা হয়েছে বলেও ১৬১ ও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি শেষে বুধবার বিকালে মোবাশ্বিরকে কোর্ট হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বৈকরঝুটি গ্রামের শংকর সরকারের পুত্র চন্দ্র শেখর সরকার (২২) গত রোববার সন্ধ্যায় খাওয়া দাওয়া শেষে প্রতিদিনের ন্যায় বাড়ির নিকটবর্তী চারানী বিলে মৎস্য ঘেরে যায়। সাড়ে চার বিঘা জমির মাছের ঘেরের বাসায় সে রাত্র পৌণে ১২ টা পর্যন্ত ফেসবুক অনলাইনে ছিল। সোমবার সকালে সে বাড়িতে না আসায় ১০ টার দিকে তার মা মাছের ঘেরে গিয়ে বাসার দরোজায় তালা ঝুলতে দেখে ফিরে আসেন। এরপর অনেক খোঁজাখুজি ও তার মোবাইল ফোনে রিং করলে একবার রিং হলেও পরবর্তীতে সুইচট অফ হয়ে যায়, তখন তাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তার কাকা ধোনা সরকার ১১টার দিকে আবারও মাছের ঘেরে গিয়ে বাসার সামনে কিছু টানাটানির চিহ্ন ও ঘেরের ডাল-পালা ও কঞ্চি অগোছালো দেখতে পেয়ে সন্দেহজনক ভাবে পানিতে নেমে পালা উঠালে চন্দ্র শেখরের অর্ধগলিত মৃতদেহ ভেসে ওঠে। এ ঘটনায় ২০ অক্টোবর ভিকটিমের পিতা শংকর সরকার বাদী হয়ে ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় অজ্ঞাতনামা রেখে ২৩(১০)২০ নং হত্যা মামলা দায়ের করে।