বিদেশের খবর : গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে—তালেবান সৈন্যরা স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় দুটি শহরের দখল নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য আফগানিস্তানে তাদের দূতাবাসের কর্মীদের সরিয়ে নিতে সাহায্য করতে কয়েক হাজার সেনা পাঠাবে বলে জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গত মে মাস থেকে ব্যাপক আক্রমণ শুরু করার পর সর্বশেষ আফগানিস্তানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার ও হেরাত দখলকে তালেবানের দুটি বড় সামরিক বিজয় হিসেবে ধরা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিকটবর্তী একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলসহ সে দেশজুড়ে তালেবানের নিয়ন্ত্রণের অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে থাকা মার্কিনিদের যত দ্রুত সম্ভব আফগানিস্তান ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ওয়েবসাইটে গতকাল বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে আফগানিস্তানে বসবাসরত মার্কিনিদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘যেভাবে সম্ভব দ্রুত আফগানিস্তান ত্যাগ করুন।’
আর্থিক সংকট বা অন্য যেকোনো কারণে কেউ দ্রুত আফগানিস্তান ত্যাগ করতে অসুবিধায় পড়লে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে। তবে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তার অবস্থা এবং লোকবলের কমতি থাকায় কাবুলসহ আফগানিস্তানে খুব কম সংখ্যক মার্কিনিকেই সহায়তা করতে পারবে দূতাবাস।’
গতকাল বৃহস্পতিবার কাবুলের ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর গজনি দখল করেছে তালেবান। মে মাসে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে এটি তালেবানের বড় অর্জন। চলতি মাসের শেষ নাগাদ মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান থেকে ফিরে আসবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে ইসলামপন্থি তালেবান গোষ্ঠীর সঙ্গে একাই লড়তে হবে আফগান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীকে।
কাবুলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করে গত ২৭ এপ্রিল আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তাদের যতটা সম্ভব দূতাবাসের বাইরে থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রলায়য়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস এ সপ্তাহের শুরুর দিকে বলেছিলেন, দূতাবাসের কর্মসূচির কোনো পরিবর্তন হয়নি, তবে প্রতিদিন নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তালেবানের দ্রুত ও সহিংস অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে পেন্টাগন জানিয়েছে, আফগানিস্তানে মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের সরিয়ে নিতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা প্রায় তিন হাজার বাড়তি সেনা পাঠাবে।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য তাদের নাগরিক এবং স্থানীয় দোভাষীদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিতে সহায়তা করার জন্য প্রায় ৬০০ সেনা পাঠানোর কথা জানিয়েছে।