নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় ক্রমশ ঘূষ বাণিজ্যের নিরাপদ আশ্রয় স্থলে পরিণত হয়েছে ভূমি অফিসগুলো। গোটা ভূমি খাতেই রয়েছে চরম অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ।
খাজনা আদায়, নাম জারি, ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন। আবার খাস জমি ব্যাক্তির নামে দাখিলা কাটা যায় কর্মকর্তার পকেট ভারি করতে পারলে। তাই তো সংবাদকর্মীকে টাকা দিয়ে কিছুটা হলেও নিজের পাপ খন্ডানোর সুযোগ চান এ সরকারি কর্মকর্তা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ধুলিহর ভূমি অফিসের রেজিস্ট্রেশন পাতা ছিড়ে ফেলেন নায়েব মঞ্জুর কাদির। এঘটনায় গত ৮নভেম্বর ২১ তারিখে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করে এটাও জানানো হয়, কেস চলমান ধুলিহর ভুমি অফিসে রেজিষ্ট্রেশন এর ২ পাতায় নোট দেওয়া আছে।
যেটি ছিড়ে ফেলে নায়েব মঞ্জুর কাদির ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে দাখিলা কেটে দিয়েছে। যে জমির মুল্য কয়েক কোটি টাকা। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ক তালিকাভুক্ত নয় এমন জমি ক তালিকাভুক্ত করিয়েছে অফিস সহকারী তহমেনাকে দিয়ে। এছাড়া নামপত্তন করতে ৪-৫ হাজার টাকা থেকে শুর করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া লাগে।
এই টাকা গ্রহণ কারি আব্দুল্লাহ জানান। আপনারা গিয়ে করে আনেন এক টাকাও লাগবে না। তবে তাদের কাছথেকে এসিল্যান্ড অফিসে প্রত্যেক ডেস্ক টাকা খায়। টাকা না দিলে ওই ফাইল আপনারাও বের করতে পারবেন না।
এ সকল অপকর্ম করানো হয় ভূমি অফিসের উদ্যোক্তা আব্দুল্লাহ ও মুহুরি আনারকে দিয়ে। তবে প্রথমে সব অভিযোগ মিথ্যা বলতে চায়, এমনকি টাকা গ্রহণের ভিডিওগুলো মিথ্যা বলে চালিয়ে দিতে চান ওই কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদির। তিনি আরও বলেন আমি আব্দুল্লাকে আমার নামে টাকা নিতে নিষেধ করবো। আপনারা (সাংবাদিক)চাইলে আপনাদেরকেও ম্যানেজ করব।
আর নিজে কাজ করলে বাড়তি টাকা লাগে না।
৭২ সালের দলিল দেখিয়ে রেকর্ড করার বিষয়টি সিকার করে নিয়েছেন এই কর্মকর্তা তবে, টাকার লেনদেনের ব্যাপারে সামনে আনতে নারাজ তিনি।
তবে বিষয়টি মিডিয়াতে না আসার জন্য অফিস থেকে এসে টাকা অফার করতে থাকে নায়েব মঞ্জুর কাদির।
দীর্ঘ দুই বছর ধরে অনুসন্ধান করায় ইতোমধ্যে অনেকের বদলি হয়েছে। উন্নত হয়েছে অফিসের অবকাঠামোও। তবে পরিবর্তন হয়নি ঘুস গ্রহণের ধরণ। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত ঘোরাইতে থাকে এক ডেস্ক থেকে অন্য ডেস্ক। সকাল থেকে বিকাল। ফলে বাধ্য হয়েই ফাইলের সাথে গুজে দিতে হয় টাকা। এছাড়া সাতক্ষীরা সদর অফিস কর্তাদের অঘোষিত নিয়োগে কর্তাদের পক্ষে টাকা গ্রহন করেন রাজ্জাক, রাজিব, শীবনাথ, আশাব আলী, হাবিবুল্লাহ, আব্দুল্লাহ সহ নাম না জানা আরও অনেকে। যাদের কে সবসময় দেখতে পাওয়া যায় সদর অফিসে সামনে ও আসেপাশে।
আব্দুল্লাহ নিজেকে ভূমি অফিসের উদ্দোক্তা পরিচয় দেয়। ঘুস চাওয়ার অপরাধে তার স্যার মঞ্জুর কাদির ক্ষমা চাইলেও সে দোষ স্বীকার করতে নারাজ। তার দাবি ৫শ টাকা ঘুস হতে পারে না। এটা সন্তুষ্টর জন্য চায় সে। সন্তুষ্ট না হলে তার স্যার সিগনেচার করতে চায় না। বিশ্বাস না হয় নিজের কাজ নিজে করে দেখুন। আমি তো নায়েব স্যারের হয়ে কাজ করি। টাকা গ্রহনের বিষয়ে স্যারই ভালো বলতে পারবেন। তিনি বিষটি জানেন।
সাতক্ষীরার এসিল্যাণ্ড মোঃ মহিউদ্দীনের কাছে মিউটেশন প্রতি ৫০০ টাকা নেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন টাকা নেই না,আমার নামে কেউ টাকা নিলে আমি কি করতে পারি। তবে আমার অফিসের কেউ যদি টাকা নেয়, আমাকে তথ্য দিলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
আর জেলা প্রশাসকের কাছে যারা অভিযোগ করেছেন তাদেরকে এডিসি রেভিনিউ জানিয়েছেন এখন লোকবল কম আছে। তাকে বরখাস্ত করলে যেটুকু সুবিধা পাচ্ছেন তাও পাবেন না।