খেরার খবর: লক্ষ্য খুব বড় নয়। জিততে হলে আফগানিস্তানকে করতে হতো ১৫৬ রান। এই রান তাড়া তো দূরের কথা, কাছাকাছিও যেতে পারেনি আফগানিস্তান। বল হাতে শুরুতেই তাদের টপ অর্ডার নাড়িয়ে দেন নাসুম আহমেদ। তরুণ এই বোলারের দাপুটে বোলিংয়ে টিকতেই পারেনি সফরকারীরা। আফগানিস্তানকে একরকম উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে ৬১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় মাহমুদউল্লাহর দল। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আগামী শনিবার মুখোমুখি হবে দুদল।
দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন নাসুম। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি। ব্যাট হাতে ভূমিকা রেখেছেন লিটন দাস। ডানহাতি এই ব্যাটার উপহার দিয়েছেন ৬০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৫৫ রানের জবাব দিতে নেমে মাত্র ৯৪ রানে থেমেছে আফগানিস্তান। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেছেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। এ ছাড়া ২০ রান করেছেন আজমতউল্লাহ। ১৬ রান এসেছে অধিনায়ক নবীর ব্যাট থেকে। বাকিরা ১০ এর ঘরও পার করতে পারেননি।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৫ রান গড়ে বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অবশ্য শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে লিটন দাসের বদলে দুই তরুণ ব্যাটার মুনিম শাহরিয়ার ও মোহাম্মদ নাঈমে ভরসা রাখে টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু দুজনের ওপেনিং জুটি বড় হলো না। দলীয় ১০ রানে বাংলাদেশকে হতাশায় ডোবান নাঈম। লম্বা সময় ধরে অফ ফর্মে থাকা নাঈম এবারও পারলেন না হাল ধরতে।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ফজল হক ফারুকির ফুল লেংথ ইনসুইঙ্গিং ডেলিভারি ঠিকমতো খেলতে ব্যর্থ হন নাঈম। বল লাগে নাঈমের পেছনের পায়ে। সঙ্গে সঙ্গে জোরাল আবেদন তোলে আফগানরা। যদিও তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে সফল হয় আফগানিস্তান। ২ রানে ফেরেন নাঈম।
নাঈম ফেরার কিছুক্ষণ পরই ফিরে যান মুনিম। ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে বাউন্ডারিতে দারুণ কিছুর আভাস দিলেও বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। পঞ্চম ওভারে রশিদ খানের এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি। আফগান লেগ স্পিনারের বলে সুইপ করার চেষ্টায় ছিলেন মুনিম। কিন্তু ব্যাটে-বলে লাগাতে পারেননি। উল্টো আউট হন। অভিষেক ম্যাচে ১৮ বলে ১৭ রানে থামেন মুনিম।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে ৩৭ রান তোলে বাংলাদেশ। চারে নামা সাকিব আল হাসানও টিকতে পারেননি আজ। ৫ রানে তাঁকে বিদায় করেন কায়েস আহমেদ।
লেগ স্পিনার কাইস আহমেদের বলে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। সেখানে থাকা মুজিব উর রহমান ক্যাচ হাতের মুঠোয় নিতে দেরি করলেন না। আগের দিন চার-ছক্কা মারার কথা বলা মাহমুদউল্লাহ থামেন ১০ রানে।
তবে চার টপ অর্ডার ব্যাটার ব্যর্থ হলেও স্রোতের বিপরীতে ছিলেন লিটন। টেস্ট-ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টিতেও ফর্ম দেখালেন তিনি। ৩৪ বলে তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি। তাঁর হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ওভারে ১৫৫ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৬০ রান করে থামেন লিটন। তাঁর সঙ্গে শেষ দিকে আফিফ করেন ২৫ রান। অভিষিক্ত ইয়াসিরের ব্যাট থেকে আসে ৮ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৫৫/৮ (মুনিম ১৭, নাঈম ২, সাকিব ৫, লিটন ৬০, মাহমুদউল্লাহ ১০, আফিফ ২৫, ইয়াসির ৮, মেহেদী ৫, নাসুম ৩, শরিফুল ৪; কায়েস ২-০-২১-১, ফারুকি ৪-০-২৭-২, মুজিব ৩-০-২৪-০, রশিদ ৪-০-১৫-১, নবী ২-০-১৯-০, জান্নাত ১-০-৫-০, আজমতউল্লাহ ৪-০-৩১-২)।
আফগানিস্তান : ১৭.৪ ওভারে ৯৪/১০ (জাজাই ৬, গুরবাজ ০, রাশলি ২, নাজিবুল্লাহ জাদরান ২৭, জান্নাত ৬, নবী ১৬, আজমতউল্লাহ ২০, রশিদ ১, মুজিব ৪, কায়েস ৮, ফারুকি ০; নাসুম ৪-০-১০-৪, সাকিব ৪-০-১৮-২, মুস্তাফিজ ৩-০-১৯-১, শরিফুল ৩.৪-০-২৯-৩, মেহেদী ৩-০-১৭-০)।
ফল : বাংলাদেশ ৬১ রানে জয়ী।