নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল সৃষ্টি করে পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করতে না পেরে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি এবং মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, উপজেলার ভাড়াশিমলা গ্রামের মৃত শেখ মতলেব আলীর পুত্র শেখ রমজান আলী।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, কালিগঞ্জ উপজেলার কামদেবপুর মৌজার এস.এ রেকর্ডীয় মালিক নি:সন্তান শেখ আব্দুল গফফারের মৃত্যুর পর তার ওয়ারেশকাম সনদ অনুযায়ী তার ওয়ারেশদের নিকট থেকে ১৯৯৫ সালে ৩৪৫ খতিয়ানে ৬.০৭জমি ৩৪৬ ও ৩৪৭ খতিয়ানে ৩.৬৫ মোট ৯.৭২ জমি ক্রয় করে বর্তমান হাল জরিপে ৯.৭২ মাঠ পর্চা ৮৮৯ দাগে প্রিন্ট পর্চা ৪০৮ খতিয়ানে ৮৮৯ দাগে ৯৩২ শতক প্রিন্ট পর্চা পেয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু গত ৩/১২/২০২২ তারিখ রাত ১২টার দিকে একই এলাকার শেখ আ: করিমের পুত্র জালিয়াতি চক্রের হোতা শেখ মঞ্জুরুল ইসলাম তার পুত্র ওয়াসিম পাপ্পুসহ ১০/১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ বাহিনী দেশীয় অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার মৎস্যঘেরে প্রবেশ ঘের থেকে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ ধরে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে মঞ্জুরুল বাহিনী পালিয়ে যায়। বিগত ২৬/১২/২০২০ তারিখ রাত ১২টার দিকে মঞ্জুরুল এবং তারপুত্র পাপ্পুসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী লাঠিয়াল বাহিনী আমার ঘের থেকে ১০/১২ লক্ষ টাকার মাছ ধরে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় উল্টো আমাকে ফাঁসানোর জন্য ১৪/১/২০২১ তারিখে ঘেরের বাসায় নিজেরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। যা স্থানীয় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এঘটনায় আমি মামলা দায়ের করি। যার জি আর নং ২২/২১। যা চলমান রয়েছে। এবিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী সরেজমিনে তদন্তপূর্বক একটি প্রত্যায়ন দিয়েছেন। প্রত্যায়নপত্রে রমজান আলী(আমি) উল্লেখিত সম্পত্তিতে ২৬ বৎসর যাবত ভোগদখলে আছি এবং মঞ্জুরুলের কাগজপত্র জাল জালিয়াতি মর্মে উল্লেখ করা হয়।
মঞ্জুল কালিগঞ্জ থানায় ১৪/১/২১ তারিখে আমাকেসহ ১৬ জনকে আসামী একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তার পুত্র ওয়াশিম পাপ্পু ৬৭/২১ জি আর মামলা দায়ের করে। মামলা দুটি তদন্তপূর্বক মিথ্যা প্রমানিত হয়। যা এখনো চলমান রয়েছে। মঞ্জুরুল অবৈধভাবে আমার সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করার জন্য একের পর এক মিথ্যা হয়রানি করে যাচ্ছে। সেখানে মঞ্জুরুলের কোন স্বর্ত নেই। সেটেলমেন্টের ডিজি তার মামলা খারিজ করে দিয়েছে। কালিগঞ্জ সেটেলমেন্টও তার কোন স্বর্ত নেই মর্মে খারিজ করে দিয়েছে। মঞ্জুরুল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭১৫/২১ নং মামলা দায়ের করে। মামলায় সহকারী কমিশনার ভূমি কালিগঞ্জ তদন্ত করে বলেন উক্ত জমি রমজান আলীর নিকট থেকে লহ্মীপদ সাহা হারি নিয়ে ১৬ বছর যাবত ভোগ দখল করে আসছেন।
সিআইডির উপ-পরিদর্শক সাতক্ষীরার নির্দেশে জেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস জানান কামদেবপুর ৩৪৫ খতিয়ানে ৯টা দলিল ৬.০৭ শতক ৩৪৬,৩৪৭ খতিয়ান ১১টা দলিলের বালাম বইতে দাতা গ্রহিতা তারিখ ঠিক আছে। সদর মহাফেজ খানায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় খতিয়ান তদন্তে দেখা যায় ৪০৮ খতিয়ান ৮৮৯ দাগ থেকে রমজান আলী।
ইতোমধ্যে সাব জজ ২য় আদালতে ৩০/২২ দেওয়ানী মামলা দায়ের করে। জালিয়াতি আমমোক্তার দলিল ২০১০/১১ সালের দলিল প্রত্যেক দলিলে আমার দাগ ৮৮৯, আমার খতিয়ান নং- ৪০৮ দিয়ে ব্যবহার করে জালিয়াতি প্রমান করেছে। ৩০/২২ কেসের বাদী শেখ জাকির হোসেন বলেন আমি মামলার কিছুই জানিনা মঞ্জুরুর জালিয়াতি করে উক্ত মামলা করেছে। এস.এ ও সি.এস রেকর্ডের মালিক আব্দুল গফফার এস এ ৩৪৫ খতিয়ানের ৮ একর ৯৬ শতক জমির মালিক ছিলেন। তারমধ্যে সরকার ১৫০/৬২/৬৩ এল এ কেসে ৭ একর ৩৪ শতক জমি অধিগ্রহন করেন পরবর্তীতে ৯/৮/১৯৯৯ তারিখে সরকার ৩৪৫ খতিয়ানে ৪ একর ৪০ এবং ৪৬ ৪৭ খতিয়ানে ২ একর ২০ শতক মোট ৬ একর ৬০ শতক জমি প্রদান করেন। উক্ত আব্দুল গফফারের ওয়ারেশগন বিভিন্ন দলিলে রমজান আলীর নিকট সাব কোবলা দলিল করায় ৯ একর ৩২ শতক জমি দখল বুঝিয়ে দেন। সেই মোতাবেক বর্তমান জরিপে ৪০৮ ডিপি খতিয়ানে ৬৫০ বাটা ৮৮৯ দাগের ৯ একর ৩২ শতক জমি রমজান আলীর নিজ নামে রেকর্ড হয় এবং চলমান সকল মামলা রমজান আলীর পক্ষে রায় পায়। রমজান আলী মূল মালিকের নিকট হতে সম্পত্তি ক্রয় করে ভোগ দখলীকার আছেন।
ভাড়াশিমলা গ্রামের শেখ আঃ করিমের পুত্র মঞ্জুরুল ইসলাম আঃ গফফারের ওয়ারেশগনের নিকট থেকে আমমোক্তার নামা বলে কাগজ সৃষ্টি করে খাজনা, মিউটেশন ও অস্তিত্ববিহীন দলিল দেখিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা এবং বানোয়াট, হয়রানী মুলক মামলা ও অভিযোগ দায়ের করে। আমি গত ২২/০৩/২২ তারিখে ১৭০৪, ১৭০৩ ও ১৭০২ নম্বর দলিলের মাধ্যমে তার সকল সম্পত্তি ডাঃ শারমিন রেজা, তাসনিম রেজা বর্ণালী ও হুসাইন মোহাম্মাদ মায়াজ এর নিকট হস্তান্তর করে দিয়েছি। মঞ্জুরুল ইসলাম আদালতে দাখিল করা মামলার যাবতীয় কাগজপত্র তুলে নেওয়ার স্বর্তে সাবেক এমপি গোলাম রেজার কাছ থেকে নগদ ২০ লক্ষ টাকা গ্রহন পূর্বক অঙ্গিকারনাময় স্বাক্ষর করেও মামলা তুলে নেয়নি। উল্টো আমাকে জড়িয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় জালিয়াতি চক্রের হোতা মঞ্জুরুলের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।##