শ্যামনগর প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এমআর ক্লিনিকে সিজারে ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকদের জন্য মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছে। ওই ক্লিনিকে সিজারের পরে এবং ওটির ভেতরে অপারেশন চলাকালীন প্রতিদিন মারা যায় কয়েকটি নবজাতক শিশু। এছাড়া ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারের অবহেলার কারণে প্রতি মাসে ২০-২৫ জন শিশুর প্রাণ হানি ঘটে বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা।
অনুসন্ধানে জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ওটির ভেতরে ও সিজারের পরে দুইটি নবজাতকের মৃত্যু হয়। সিজারের একদিন পরে ডাক্তার আনিসুর রহমানের অবহেলার কারণে আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের লুৎফর রহমান ও শামিমা নাসরিন দম্পতির নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়।
মৃত নবজাতক শিশুর নানী জানান, গত বুধবার বিকাল ৪ টার সময় তার মেয়েকে ওটিতে সিজারের জন্য নিয়ে যায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সিজারে পরে ছেলে সন্তানসহ তার মেয়েকে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বাইরে নিয়ে আসে। নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই শ্বাসকষ্ট লক্ষ্য করে তার স্বজনরা।
বিষয়টি ডাক্তার আনিসুর রহমানকে জানালেও তিনি দেখে বলেন বাচ্চা সুস্থ আছে। পরবর্তীতে রাত ১২ টার দিকে বাচ্চার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।এসময় বাচ্চার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য নার্সও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পায়ে পড়তে থাকেন নবজাতকের নানা আয়ুব আলী গাইন। তাতেও কোন লাভ হয়নি তাদের। ডাক্তার না থাকায় ওই নবজাতকের কোন চিকিৎসা দিতে পারেনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। অবশেষে কোন চিকিৎসা না পেয়ে জন্মের ১৩ ঘন্টার মাথায় মৃত্যুর কাছে পরাজিত হয় ওই নবজাতক।
ডাক্তার আনিসুর রহমান ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে তার নাতীনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মৃত নবজাতকের মা শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য শামিমা পারভীন জানান, তার বুকের ধনকে সুচিকিৎসা না দিয়ে ডাক্তার আনিসুর রহমানও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হত্যা করেছে। তিনি এ হত্যার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।
এছাড়া শনিবার দুপুর ৩ টার সময় হাসপাতালের ওটির ভিতরে উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে এক নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়। কসাই খ্যাত ডাক্তার আনিসুর রহমান অপারেশন থিয়েটারে ওই নব জাতককে হত্যা করেন বলে জানান ক্লিনিকে চিকিৎসারত রোগীরা।
বিষয়টি জানতে চাইলে এমআর ক্লিনিকের পরিচালক সোলাইমান হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,গাবুরায় যে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে সে ডাক্তার আনিসুর রহমানের আত্নীয়। এছাড়া আরেকটি নবজাতকের মৃত্যু বিষয় জানতে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
বিষয়টি জানতে চাইলে ডাক্তার আনিসুর রহমান দুইজন নবজাতকের মৃত্যু বিষয় এই প্রতিবেদককের কাছে স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন দুইজন নবজাতকের মধ্যে একজন তার আত্নীয়। মৃত্যুর বিষয় কোন পরিবারের অভিযোগ নেই বলে তিনি জানান।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জিয়াউর রহমানের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।