কে এম রেজাউল করিম দেবহাটা : “কবির ভাষায় মা তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে” সেই চিরাচরিত গানের ভাষায় মনে দোলা দেই, যখন বাস্তবে প্রকৃতির সেই দৃশ্য চোখে পড়ে। দেবহাটায় ঋতুরাজ বসন্তের আগমনের সাথে সাথে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে সোনালী রঙের আমের মুকুল।
দেবহাটা উপজেলা ও তার আশেপাশের এলাকাগুলোতে ছোট-বড় প্রায় সকল গাছে ঝুলছে থোকা থোকা আমের মুকুল। এতে বেড়েছে ভ্রমরের আনাগোনা আর সেই সাথে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হচ্ছে দেবহাটা।
দেবহাটার গ্রামগুলোতে ঘুরে দেখা যায় বাড়ির আঙিনায় পুকুরপাড় বাগানসহ সকল আম গাছে ঝাঁপিয়ে পড়েছে মুকুলে। ছোট-বড় প্রায় সকল গাছ মুকুলে ভরে গেছে স্থানীয় দেশি জাতসহ অম্রপালি, ফজলি, লতাই, ন্যাংড়াসহ নানা জাতের আম। আর গাছে এসেছে পর্যাপ্ত মুকুল। মুকুল আসলে অনেকেই গাছে স্প্রে করার জন্য ভ্রাম্যমাণ স্প্রেয়ের অপেক্ষায় থাকে। আবার কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে স্প্রে করে থাকে।
দেবহাটার বিভিন্ন নার্সারিতে কথা বললে নার্সারি মালিকগন বলেন, মুকুল আসার সাথে সাথে মুকুলে সকালে পানি স্প্রে করতে হয় ও হালকা কীটনাশক স্প্রে করা দরকার। কুয়াশা বেশি হলে আমের মুকুল পুড়ে যায়। মুকুল থেকে গুটি ধরার পরে গাছে পিপড়া লাগতে পারে, পিঁপড়া আমের গুটি ক্ষতিসাধন করে থাকে। তবে এ বছর কুয়াশা কিছুটা কম থাকায় আমের ফলন ভালো ও বেশি হতে পারে।
এই ব্যাপারে কয়েক জন, আম বাগান মালিকদের কাছে জানতে চাইলে আম ব্যবসায়ী ঝন্টু দে বলেন, তারা এবছর আমের আশানুরুপ ফলন আশা করছেন। তিনি বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনায় এবার আমের বাম্পার ফলন হবে এবং ৭৫ ভাগ আম পাওয়া যাবে বলে তাদের ধারনা। তিনি আরো বলেন, দেবহাটার আম এলাকার বিভিন্ন বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। তবে তিনি এই বছর মুকুল আসার মুহুর্তে বৃষ্টি না হওয়ায় এবছর আমের মুকুল তাপে পুড়ে যাওয়ায় সম্ভাবনা থাকবে বলে কিছুটা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে আশা করছেন গত বছরের চেয়ে এবছর আমের বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন, তিনিসহ এই এলাকার অনেক ব্যবসায়ী নিজস্ব আম বাগান থেকে অনলাইন বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফরমালিনমুক্ত আম বিক্রি করে থাকেন। তিনি কোন মানুষ ভাল জাতের আম কিনতে চাইলে তার নিজস্ব মোবাইল (০১৭১০-৩১৭৯৫২) এই নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।
এবিষয়ে দেবহাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর বলেন, এবছর আমের চাষ হয়েছে ৩৬৮ হেক্টর জমিতে।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফল পাবেন চাষীরা এবং চাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।