ন্যাশনাল ডেস্ক : পুলিশের বাধার কারণে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা । তাঁরা বলছেন, সমিতির নেতারা সুপ্রিম কোর্ট থেকে গাড়িতে করে প্রধান বিচারপতির হেয়ার রোডের বাসভবনের উদ্দেশে রওনা দিলে মৎস্য ভবনের সামনে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়।
তবে পুলিশ বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এমন দাবি অস্বীকার করেছেন।
প্রধান বিচারপতির বাসভবন ঘিরে শুক্রবার সারা দিনই ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের আনাগোনা। বাসভবনের দুটি গেটের সামনেই ছিলে তাদের অবস্থান। বাসভবনে কে ঢুকলেন, কে বেরোলেন—মূলত তা-ই পর্যবেক্ষণ করেছে তারা। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও একই কাজ করতে দেখা গেছে।
এরই মধ্যে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পক্ষ থেকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সম্পাদক মাহবুব উদ্দীন খোকনসহ অন্য নেতারা বিকেল পাঁচটার দিকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। তাঁদের এ ঘোষণার পর প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের ভিড় আরও বাড়ে। পৌনে চারটার দিকে সমিতির দুজন নারীনেত্রী সেখানে আসেন।
প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে যখন রীতিমতো ছোটখাটো জটলা বেধে যায়, তখন পাঁচটার দিকে সেখানে আসেন রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাঈনুল ইসলাম। তাঁর নির্দেশে পুলিশের তিনজন কনস্টেবল গেটের সামনে অবস্থান নেন। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশের রমনা অঞ্চলের উপকমিশনার মারুফ হাসান সরদারসহ আরও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত হন।
সোয়া পাঁচটার দিকে সমিতির সহসভাপতি উম্মে কুলসুম প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে আসেন। কিছুক্ষণ পর গণমাধ্যমকর্মীদের ডেকে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার তাঁরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে কোনো ধরনের বাধা নেই। সে অনুযায়ী আইনজীবী সমিতির নেতারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনের দিকে রওনা দিলে মৎস্য ভবনের সামনে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয় বলে দাবি করেন উম্মে কুলসুম।
সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন মোবাইলে বলেন, তাঁর এবং সম্পাদকের গাড়ি যখন মৎস্য ভবনের মোড়ের সিগন্যালে পৌঁছায়, তখন পোশাক পরা এবং সাদাপোশাকের কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে তাঁর গাড়িটি থামান। গাড়িতে কয়েকজন কনিষ্ঠ আইনজীবী ছিলেন। তিনি ছিলেন সম্পাদকের গাড়িতে। পুলিশ সদস্যরা ওই কয়েকজন আইনজীবীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে গাড়িতে তিনি আছেন কি না, তা তল্লাশি করেন। এরপর তাঁদেরকে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশের এমন আচরণ দেখে অন্য গাড়িতে থাকা তাঁরাও (সভাপতি নিজে) আর সামনে এগিয়ে যাননি। গাড়ি ঘুরিয়ে চলে আসেন।
তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রমনা অঞ্চলের উপকমিশনার মারুফ হাসান সরদার বলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কে দেখা করবে, সেটি দেখার বিষয় তাঁদের নয়। প্রধান বিচারপতি কাউকে অনুমতি দিলে তাঁরা দেখা করতে পারেন। আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে তাঁর কোনো কথা হয়েছে কি না, সেটা তাঁর জানা নেই। তবে তাঁরা কাউকে কোনো ধরনের বাধা দেননি।