জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেওয়া শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিলেট হয়ে ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
তাকে বরণ করে নিতে বিমানবন্দরে এসময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্য, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং সমাজের বিশিষ্ট ও গুণীজনেরা।
টানা ২০ দিনের সফল সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর ফিরে আসা উপলক্ষে রাস্তার পাশে অবস্থান নিয়েছে লাখো মানুষ। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জননেত্রীকে গণসংবর্ধনা দিতে আগে থেকেই দলের নেতা-কর্মী এবং জনসাধারণের প্রতি আহ্বান ছিলো।
সকাল ৯টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফিরে আসার কথা থাকলেও; প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দিতে সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাস্তার দু-ধারে অবস্থান নিতে শুরু করে।
নেতাকর্মীরা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ এলাকা থেকে শুরু করে বনানী, মহাখালী, জাহাঙ্গীর গেট, বিজয় সরণি হয়ে গণভবনের দক্ষিণ পাশের গেট পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের ফুটপাত পর্যন্ত অবস্থান নিয়েছেন।
শুধু মহানগরী ঢাকা নয়; দূর-দূরান্ত থেকেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা জানাতে এসেছেন সাধারণ মানুষ। কেউ ট্রাকে-পিকাপে-বাসে; যে যেভাবে পেরেছেন ছুটে এসেছেন। জননেত্রী-মনবতার নেত্রীকে একনজর দেখার জন্য।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে ২১ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভাষণ প্রদাণ করেন। যা অধিবেশন শুরুর আগে থেকেই ছিল আলোচনায়। বিশ্বনেতাদের সকলের আগ্রহ ছিল রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কী বলবেন আর সমাধানেরই বা কী পথ দেখাবেন।
শেখ হাসিনা তার ভাষণে মিয়ানমার থেকে সেনা নিপীড়নের মুখে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দুঃখ- দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বাস্তব সম্মত ৫ দফা প্রস্তাব বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন। যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
সেখানকার কর্মসূচি শেষে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে ভার্জিনিয়ায় যান তিনি। সেখানে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার পরিবারের সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটানো শেষে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওনা হয়ে লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল। লন্ডন আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে আসার কথা ছিল।
কিন্তু হঠাৎ পেটে ব্যথা অনুভব করায় তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে-গলব্লাডারে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৮টায় সফল অস্ত্রোপচার হয় তার।