প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় আছে শিশুরা। সুইটজারল্যান্ডের জেনেভায় রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এ কথা উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। এই প্রতিবেদনে এসব শিশুদের আঁকা কিছু ছবিও প্রকাশ করা হয়।
যে চোখে অপার বিস্ময়ে পৃথিবীর রূপ-রস অবলোকন করার কথা, সে চোখ সময়ের অনেক আগে দেখে ফেলেছে পৃথিবীর নিষ্ঠুরতার চরমতম নির্দশন। রং তুলি পেয়ে এই অভিজ্ঞতা কাগজে ফুটিয়ে তুলেছে ১১ বছরের মুনজুর আলী। সে একাই নয়, কক্সবাজারের বালুখালি ক্যাম্পে বসে ইউনিসেফ সদস্যদের কাছে এরকম অনেক ছবিই এঁকে দেখিয়েছে মিয়ানমার থেকে আসা অসংখ্য শিশু। মুনজুর আলী জানায়, পালিয়ে এসে বেঁচে গেছে সে, নয়তো নিশ্চিতভাবেই প্রাণটা খোয়াতে হত। বাকিরাও জানিয়েছে নৃশংসতার নানা বর্ণনা।
এসব ছবি উঠে এসেছে রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে প্রকাশিত জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে। এতে উদ্বাস্তু শিবিরে শিশুদের বর্তমান অবস্থাকে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, পৃথিবীর নরক হিসেবে। জরিপে বের হয়ে এসেছে, প্রতি ৫টি রোহিঙ্গা শিশুর মধ্যে ১জন চরম অপুষ্টির শিকার।
প্রতিবেদনটির লেখক ও ইউনিসেফের যোগাযোগ উপদেষ্টা সিমন ইঙ্গগ্রাম বলেন, ‘প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা এই শিশুদের স্বাস্থ্যের অবস্থা ছিলো আশঙ্কাজনক। ক্ষুধার্ত, দূর্বল এবং রুগ্ন অবস্থায় এসে পৌঁছায় তাদের অধিকাংশই। এদের অনেকেই আগে থেকেই ছিল পুষ্টিহীনতার শিকার।’
প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে ৫৮ শতাংশই শিশু। এক বৈঠকে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি এই শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রানের আহ্বানও জানান ইউনিসেফ কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত ত্রাণ ছাড়া এ অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয় বলেও জানান তাঁরা। এছাড়া, তাঁরা আরো জানান এ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাত্র সাত শতাংশ তাঁরা পেয়েছেন।