আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিদের আবারও হুঁশিয়ার করলেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এমপিদের যেসব বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তার বিনিময়ে কী উন্নয়ন হয়েছে, সেসবের হিসাব নেওয়া হব। বর্তমান এমপিরা আবারও মনোনয়ন পাচ্ছেন- এমনটি ভেবে ঘরে বসে থাকলে ভুল হবে। তিনি বলেন, ‘এমপিদের মধ্যে কারা কী কাজ করছেন, তার সব রিপোর্ট আমার কাছে রয়েছে। সবাইকে যোগ্যতার ভিত্তিতেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
মনোনয়ন প্রত্যাশী যেসব নেতা বর্তমান এমপিদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন, তাদের বিষয়েও সতর্ক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ, এসব অভিযোগের কারণে সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ পাচ্ছে বিএনপি। শনিবার (৬ জানুয়ারি) রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
বৈঠকে দলীয় সভাপতির বিভাগীয় সফরের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে জেলা সফর করবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ সফর শুরু করবে দলটি। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরে অংশ নিতে সিনিয়র নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রচারণার কাজ আরও বাড়ানোর পাশাপাশি বিএনপির অপপ্রচারের জবাব দিতে কেন্দ্রীয় সব নেতাকে নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগে বিভেদ-বিরোধ ছিল। এখন এগুলো কিছুই নেই। বিভেদ-বিরোধে দল অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আমি নেতৃত্ব দিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দলকে সুসংগঠিত করেছি।’
রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুরসহ সব বিভাগীয় শহরে সফরে যাবেন শেখ হাসিনা। যেসব বিভাগে সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, সেগুলোর তফসিল ঘোষণার আগেই সফর শেষ করবেন তিনি। জানা গেছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এ সফর শুরু হবে। একই সঙ্গে যেসব সিটি করপোরশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যেসব এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগ করার নির্দেশ দেন তিনি। এদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিএনসিসিতে সবুজ সংকেত পাওয়া প্রার্থী আতিকুল ইসলামকেও মানুষের দরজায় দরজায় যেতে হবে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়। তফসিল ঘোষণার পরে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে। বৈঠকে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বদরউদ্দিন কামরান সিলেট সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তুলে ধরে বলেন, ‘ওখানে সরকার বরাদ্দ দেয়। এ বরাদ্দে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে চলছে। কিন্তু বর্তমান মেয়র আরিফুল হক এসব কৃতিত্ব নিজের ও বিএনপির ঘরে তুলছেন। এ বিষয়ে আমাদের নজর দেওয়া দরকার।’
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলোর প্রচারে আপনাদের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। ভোটের চিন্তায় আমি উন্নয়ন কাজ কখনও বন্ধ করতে পারবো না। সব জায়গায় সমানভাবে উন্নয়ন করা আমার লক্ষ্য। উন্নয়ন এক জিনিস ভোট আরেক জিনিস।’ তিনি বলেন, ‘সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে মানুষের দরজায় দরজায় যেতে হবে এবং মানুষের কাছে নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে হবে। সরকারের উন্নয়ন, বিএনপি-জামায়াত জোটের অপকর্মের কথা তুলে ধরতে হবে।’