ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি (কালিগঞ্জ) : কালিগঞ্জের তারালী ইউনিয়নের পাইকাড়া গ্রামে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার দু’দিন পরও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ এদিকে নিহত গৃহবধূকে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার এশার নামাজের পর পিতার বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত গৃহবধূর পিতা তারালী ইউনিয়নের বরেয়া গ্রামের আব্দুল গফফার জানান, প্রায় দু’বছর পূর্বে তার মেয়ে লীমা পারভীনের সাথে বিয়ে হয় পাশ^বর্তী বরেয়া গ্রামের আকবর সানার ছেলে আকরাম সানার। মোটরসাইকেল কেনার জন্য টাকা না পেয়ে গত ১৭ জানুয়ারী বেলা ২ টার দিকে তার মেয়ে লীমা পারভীনের (১৯) উপর নির্মম নির্যাতনের পর শরীরে পেট্রল ঢেলে দেয় শাশুড়ি জাহানারা খাতুন। এরপর তার শরীরে অগ্নিসংযোগ করে শাশুড়ি জাহানারা ও শ^শুর আকবর সানা। লীমা পারভীনের শরীরে দাউ দাউ করে আগুন জ¦লতে থাকলে তিনি পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৭ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩ টার দিকে হার মানে লীমা পারভীন। পরদিন সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ পিতার বাড়িতে নিয়ে এশার নামাজের পর জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি লীমা পারভীনের পিতা আব্দুল গফফার বাদী হয়ে লীমা পারভীনের শাশুড়ি জাহানারা খাতুন, শ^শুর আকবর সানা ও স্বামী আকরাম সানা (২৪) কে আসামি করে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর: ৩, তারিখ: ০৩/০২/১৮)। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। থানার উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। যেহেতু মৃত্যুর আগেই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে সেজন্য পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে এটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হবে। যৌতুকের দাবিতে তরুণী গৃহবধূকে নির্যাতনের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহত গৃহবধূর পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী।
পূর্ববর্তী পোস্ট