ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার জন্য স্বস্তির খবর। তার ওপর থেকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে ঢাবি। কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জানান, সুফিয়া কামাল হলের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটি বুধবার (১৮ এপ্রিল) আইনশৃঙ্খলা কমিটির কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে রগ কাটার কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে এশা সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হলেন। রগ কাটার অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলো।
বুধবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ঢাবি উপাচার্য বলেছেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী কবি সুফিয়া কামাল হলে রগ কাটার কোনও ঘটনা ঘটেনি। যেহেতু রগ কাটার কোনও ঘটনা ঘটেনি, তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে।’
এশাকে শারীরিকভাবে হেনস্তার ঘটনায় জড়িত ২৬ জন শিক্ষার্থীর নাম হল কর্তৃপক্ষ শৃঙ্খলা কমিটিতে জমা দিয়েছে বলেও জানান ঢাবি উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে এই ২৬ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রগ কাটার ঘটনা না হয়ে থাকলে মোর্শেদা খানম কীভাবে আহত হয়েছিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবি উপাচার্যের ভাষ্য, ‘মোর্শেদা নিজেই বলেছে যে, সে নিজেই আঘাত পেয়ে পা কেটেছে। আর সে কীভাবে আহত হয়েছে তা আমার চেয়ে সে-ই ভালো বলতে পারবে। তাকে জিজ্ঞাসা করলেই যথাযথ উত্তর পাওয়া যাবে।’
এশাকে হেনস্তার ঘটনা কি পূর্বপরিকল্পিত? নাকি তেমন পরিস্থিতি হঠাৎ সৃষ্টি হয়েছে? জানতে চাইলে ঢাবি উপাচার্য কোনও কথা বলতে রাজি হননি।
গত ১১ এপ্রিল রাতে কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার বিরুদ্ধে হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোর্শেদা খানমের পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে এ ঘটনা ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা রাতে কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে এসে এশাকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। সেদিন এ ঘটনায় হলের ভেতরের ছাত্রীরাও আন্দোলনে ফেটে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী এলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে তাৎক্ষণিক মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে এশাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
একইসঙ্গে এশাকে ছাত্রলীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়। পরে ১২ এপ্রিল ছাত্রলীগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী এশা নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ১৩ এপ্রিল ছাত্রলীগ এশার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়। তাকে হেনস্তা করার অভিযোগে ১৬ এপ্রিল মোর্শেদা খানমসহ ২৪ ছাত্রলীগ নেত্রীকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।