নিজস্ব প্রতিবেদক :
আদালতের উপেক্ষা করে বড় ভাইয়ের রেকর্ডীয় সম্পত্তি থেকে ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছোট ভাইদের বিরুদ্ধে। ২৫ এপ্রিল সকালে শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা ঘুড্ডের ডাঙ্গী এলাকায় এঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে আতিয়ার রহমান জানান, দহাকুলা মৌজা, জে এল ৯৭, এস এ ৫৪২, খতিয়ান নং- ৮/৪, দাগ নং- ১৭৫৬, যার হোল্ডিং নং ২৮৫৬, জমির পরিমান ৩৬৩৭১০০ শতক, খতিয়ান ১৯০২/১০, হোল্ডিং নং ৮৩৩৭, দাগ নং ২৮৭১, ৩৮৩০, জমির পরিমান ৫০.৩০ শতক, মৌজা- দহাকুলা, খতিয়ান নং- ৮/৩ হোল্ডিং নং- ২৭৪৫, জমির পরিমান ১৮.৬৩, মৌজা- সাতক্ষীরা, খতিয়ান ১৯০২/১১, হোল্ডিং নং- ৮৩৩৮, দাগ নং- ২৫৭৩, জমির পরিমান ৫.৭৫ শতক। মোট ০৪ খতিয়ানে ১১১.৭৫ শতক সম্পত্তি ওয়ারেশ এবং ক্রয়সূত্রে জমির মালিক হয়ে দীর্ঘদিন ভোগ দখলে ছিলেন।
বিগত ২০১৩ সালের আতিয়ার রহমানের পিতা আব্দুল কাদের মৃত্যুবরণ করেন। পিতা জীবিত থাকা কালিন ভিটাবাড়ীর ৩৭ শতক জমির মধ্যে ৩৩ শতক ৩ ভাই ও ২ বোন লিখে নেয়। পিতার মৃত্যুর ১ বছর পর ২০১৪ সালের দিকে অন্য ৩ ভাই মতিয়ার, মশিবার ও হবিবার রহমান তাদের পিতা ৯ লক্ষ টাকা ঋণ ছিলেন বলে দাবি করেন। আর এ কারণে পুরো ৯ লক্ষ টাকা পরিশোধের জন্য আতিয়ার রহমানের উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। অথচ বিগত ২০০৪ সাল থেকে আতিয়ার রহমান পিতার সংসার থেকে আলাদা থাকেন। এছাড়া কার কাছে তাদের পিতা ঋণ ছিলেন এমন কোন প্রমান দেখতে চাইলে তারা তা না দেখিয়ে এড়িয়ে যান। তারপরও সঠিক প্রমান থাকায় আতিয়ার রহমান পিতার ঋণ বাবদ ৬০ হাজার টাকা এবং মতিয়ার ঋণ বাবদ ৫ হাজার মোট ৬৫ হাজার পরিশোধ করেন এবং মিউটেশন কেস বাবদ ১১ হাজার টাকা ব্যয় করেন। এদিকে ইতোমধ্যে উক্ত ৩ ভাইয়ের ভাগের দহাকুল মৌজায় সমুদয় সম্পত্তি তারা একই এলাকার মৃত হেমান্ত দাসের ছেলে নব মুসলিম আবু বক্কর সিদ্দিকের নিকট বিক্রয় করেছেন। এঘটনায় সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের সহযোগিতায় পুলিশ সুপারের অপরাধ দমন শাখায় এক সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বিমাতা ৩ বোন,সৎ মাতা এবং আতিয়ার কে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। টাকা পরিশোধের সাথে সাথে উল্লেখিত ৫ জনের সমুদয় সম্পত্তি বুঝায়া দিবে এবং পরবর্তীতে উল্লেখিত ৩ ভাই তাদের পিতার ঋণ, বন্ধক বাবদ কোন টাকা দাবি করতে পারবে বলে অঙ্গীকার করেন। কিন্তু ওই টাকা ছাড়াও আরো ৮ লক্ষ টাকা দাবি করে। না দিলে জমি জবর দখল করবে বলে হুমকি প্রদর্শন করে। উপায় না পেয়ে আতিয়ার রহমান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মতিয়ার রহমান, মশিবার রহমান ও হবিবার রহমানের নামে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সদর উপজেলা কশিমান(ভূমি) কে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন এবং সাতক্ষীরা সদর থানাকে শান্তি শৃঙ্খলা বজার রাখার নির্দেশ দেন।
সে মোতাবেক গত ০৮/০৩/১৮ তারিখে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সহকারী কমিশার (ভূমি) এর আওতায়ভুক্ত ধুলিহর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মোকলেস আলী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন মতিয়ার,মশিবার ও হবিবারের নামে দহাকুল মৌজায় কোন জমি নেই। প্রতিবেদন দাখিলের পর আদালত গত ১৭/৪/১৮ তারিখে “ওসিকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা নির্দেশ দেন। এরপর সেখানে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এস আই কবির হোসেন মোল্যাকে দায়িত্ব প্রদান করেন। কিন্তু উল্লেখিত মতিয়ার, মশিবার ও হবিবার থানাপুলিশকে ম্যানেজ করে কথিত বিএনপি নেতা রকিব ও কথিত মহুরী সাঈদের কু পরামর্শে গত ২৬ এপ্রিল’১৮ তারিখে লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক আতিয়ারের সম্পত্তি থেকে প্রায় ৫০ বস্তা কাঁচা ধান কেটে নিয়ে যায় এবং ৩ তিন আগের এক বিঘা জমির কাটাধানও তুলে নিয়ে যায় তারা। তবে এলাকার জনরোষে পড়ে ১৩ বস্তা ধান ও ২ কাউন বিছলি ফেরত দিতে বাধ্য হয়। এঘটনায় ভুক্তভোগী আতিয়ার উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বড় ভাইয়ের সম্পত্তি থেকে ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ ছোট ভাইদের বিরুদ্ধে
পূর্ববর্তী পোস্ট