স্পোর্টস ডেস্ক: বেজে উঠেছে বিশ্বকাপের ঘণ্টা। আর মাত্র ২৭ দিন পর রাশিয়ায় বসবে বিশ্ব ফুটবলের ২১তম আসর। বরাবরের মতো এবারও ফেভারিটের তকমা গায়ে সেঁটে সেখানে যাচ্ছে ব্রাজিল। হেক্সা (ষষ্ঠ শিরোপা) মিশনে ইতিমধ্যে দল ঘোষণা করেছেন কোচ তিতে। এবার দলটির সেই সাধ পূরণ হবে বলেও প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে।
কেন সেলেকাওরা রাশিয়া বিশ্বকাপে হট ফেভারিট? কোন অদৃশ্য কারণে তাদের এগিয়ে রাখা হচ্ছে? কেনইবা পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সোনালি ট্রফি জয়ের প্রবল সম্ভাবনা আছে, তা বিশ্লেষণের প্রয়াস চালানো হল-
সেরা মানের গোলরক্ষক : ব্রাজিলের এই দলে রয়েছে বিশ্বমানের গোলরক্ষক। প্রথম পছন্দ ২৫ বছর বয়সী অ্যালিসন বেকার ইতিমধ্যেই নিজের জাত চিনিয়েছেন। রোমার হয়ে দুর্দান্ত খেলছেন। তার অসাধারণ নৈপুণ্যে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল খেলেছে দলটি। সিরিআতে রেখেছেন সেরার লড়াইয়ে। তার বিকল্প হিসেবে জায়গা পাওয়া এডারসন ও ক্যাসিওতেও আছে আস্থা।
মজবুত রক্ষণভাগ: সমসাময়িক ফুটবল বিশ্বে অন্যতম সেরা রক্ষণসেনা থিয়াগো সিলভা। তার টেকনিক, বল কাড়া ও ট্যাকল দক্ষতা নিয়ে দ্বিতীয়বার প্রশ্ন তোলার কোনো উপায় নেই। সেই সঙ্গে আছেন সময়ের সেরা মার্সেলো,দানিলো, মারকুইনহোস, মিরান্দারা। স্বাভাবিকভাবেই এ মুহূর্তে বিশ্বের সেরা রক্ষণভাগ ব্রাজিলের।
অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ মিডফিল্ড: গোলরক্ষককে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য সিলভা-মার্সেলোদের ঠিক সামনেই আছেন ফিলিপে কুতিনহো, উইলিয়ান, পাওলিনহো, কাসেমিরোরা। তারা যেমন বল নিয়ে খেলতে পারেন, তেমন খেলাতে পারেন। গোল করতেও সামন পারদর্শী। অভিজ্ঞতাসমন্ন এসব মিডফিল্ডরাই হেক্সা জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে ব্রাজিলিয়ানদের।
নেইমারের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল নয়: চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা একক খেলোয়াড়ের ( লিওনেল মেসি) ওপর নির্ভরশীল হলেও ব্রাজিল নয়। অবশ্যই দলটির সেরা তারকা নেইমার এবং তার ওপর বেশি আস্থা রাখছে তারা। তবে তার পাশে গ্যাব্রিয়েল জেসুস, ডগলাস কস্তারা কম যান না। নিজেদের দিনে আলো কেড়ে নিতে পারেন তারাও। বিকল্প হিসেবে হাতে আছে রবার্তো ফিরমিনোও টাইসনের মতো গোলমেশিন।
বিতর্কের ঊর্ধ্বে কোচ: চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বিচারে ব্রাজিলের আগের দুই কোচের চেয়ে অনন্যতিতে। খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে আনতে তার জুড়িমেলা ভার। সবার সঙ্গেইরয়েছে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক। তার অধীনে সেরাটা নিংড়ে দিতে মরিয়া সবাই। বেশ দক্ষতার সঙ্গেই সামলান মিডিয়া। দুঙ্গার উত্তরসূরি হিসেবে দলের দায়িত্ব কাঁধে নেয়ার পর এখন পর্যন্ত তাকে কোনো বিতর্ক ছুঁতে পারেনি। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফের সবাই ভালোবাসেন, সম্মান করেন তিতেকে।
সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স : ব্রাজিলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সই ভক্ত-সমর্থক, বোদ্ধা-বিশ্লেষকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। লাতিন আমেরিকা থেকে সবার আগে বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছেন নেইমাররা। এই তাদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। বাছাইপর্ব পরবর্তী বিশ্বকাপ প্রস্তুতি মিশনেও সমান উজ্জ্বল তারা।
ব্রাজিল চূড়ান্ত দল
গোলরক্ষক : অ্যালিসন, এডারসন ও ক্যাসিও।
ডিফেন্ডার : মার্সেলো, দানিলো, ফিলিপে লুইস, ফ্যাগনার, মারকুইনহোস, থিয়াগো সিলভা, মিরান্দা ও পেদ্রো গেরোমেল।
মিডফিল্ডার : ফিলিপে কুতিনহো, উইলিয়ান, ফার্নান্দিনহো, পাওলিনহো, কাসেমিরো, রেনাতো আগাস্তো ও ফ্রেড।
ফরোয়ার্ড : নেইমার, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রবার্তো ফিরমিনো, ডগলাস কস্তা ও টাইসন।