রাজনীতি ডেস্ক: দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের পেছনে সরকারের ভিন্ন ধরনের চক্রান্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এটাকে শুধু মাদকবিরোধী অভিযান মনে করলে ভুল হবে। এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে। এর পেছনে নিশ্চয় আরও একটা ভিন্ন ধরনের চক্রান্ত রয়েছে, যা করে করে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ টিকে আছে।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর মুক্তির দাবিতে সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক ফোরাম।
সংগঠনটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিনের সভাপতিত্বে ও গাজী রেজওয়ান উল হোসেন রিয়াজের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মসিউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে যাদের হত্যা করা হচ্ছে তাদের বিচার হচ্ছে না কেন? বাংলাদেশে একটা নতুন পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য, অন্য কোনো কিছু আগাম সৃষ্টি করার জন্য এটা করা হচ্ছে কিনা- এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
দেশজুড়ে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে রোববার আরও ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা ৯১।
শনিবার মাদকবিরোধী অভিযানের সময় কথিত বন্দুকযুদ্ধে টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হক নিহত হন। এ প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, টেকনাফের সব মানুষ বলেছে একজন নিরীহ ভালো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
পৌর মেয়র প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন, একরামুল হকের আর্থিক সচ্ছলতা নেই। সে তিনবার নির্বাচিত কাউন্সিলর হয়েছেন। তাহলে কাদের ইঙ্গিতে এ হত্যা করা হয়েছে। কারা এ তালিকা তৈরি করেছে?
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঘরকে সুন্দর করে রেখে দিয়েছেন। ঘরে যারা মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত, মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত তাদের গায়ে ফুলের টোকাও দিচ্ছেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আনন্দবাজার পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, আসন্ন নির্বাচনে ভারতের সাহায্য চেয়েছেন শেখ হাসিনা। এ খবর যদি সত্য হয় তাহলে কি এ দেশ স্বাধীন আছে? তাহলে কি দেশকে অঙ্গরাজ্য বানাতে চায় সরকার?
তিনি বলেন, এ ভয়াবহ দানব যে আমাদের বুকের ওপর এসে পড়েছে তাকে সরাতে হবে। যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে সরাতে না পারি তাহলে জাতি আমাদেরকে ক্ষমা করবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্দোলন করেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এটাই সত্য কথা। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া কোনো আন্দোলন সফল হয় না। তাই জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক। নির্বাচন অবশ্যই দিতে হবে। সেটা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং জনগণের ভোটের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।