খেলার খবর: ফুটবল পাগল আধুনিক বাংলাদেশিদের জানার আছে অনেক কিছু। পেলে-ম্যারাডোনা-মেসি-নেইমার নিয়ে সারাক্ষণ মত্তরা অনেকেই জানে না পুসকাস-ককসিসের হ্যাঙ্গেরি বা ক্রুয়েফ এর হল্যান্ড দলটির কথা। এমনকি জিকোর ব্রাজিলের খেলাও অনেকেরই দেখা নেই। বাস্তেন-খুলিতের হল্যান্ড দলটিও ছিল অসাধারণ।
বিশ্বের সুন্দরতম খেলা ফুটবলের ইতিহাসে অনেক দেশই মাঝারি মানের দল নিয়ে সাফল্য পেয়েছে আবার অনেক দেশই বিশ্ব সেরা দল নিয়েও ট্রফি জিততে পারেনি।
কিন্তু কোন দলটি ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা হওয়ার যোগ্য?
এই প্রশ্নটির উত্তর দেয়া সম্ভবত অসম্ভব। কারণ এক দশকের সেরা খেলোয়াড়দের আরেক দশকের সেরার মুখোমুখি করা সম্ভব না।
কিন্তু স্যালফোর্ড ইউনিভার্সিটির সুপার কম্পিউটার স্যামের সাহায্য নিয়ে সেই প্রশ্নটির উত্তরই খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে বিবিসি স্পোর্ট টিম।
তারা প্রত্যেক দলের খেলা একটি করে ম্যাচ পর্যালোচনা করেছেন এবং প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের ফলাফল পর্যালোচনা করেছেন।
পর্যালোচনার তালিকায় ছিল আরো নানা ধ্রুবক। তবে তারা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেছেন সেরা দশ দলের তালিকায় জায়গা পায়নি ইংল্যান্ড ও ইটালির কোন দল। ব্রাজিলের রয়েছে তিনটি দল।
তাহলে সেরা দল কোনগুলো, দেখে নেয়া যাক। শুরু হচ্ছে দশটি দলের তালিকার শেষটি থেকে:
১০. পশ্চিম জার্মানি (১৯৭৪): দুই বছরে ত্রিশটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে দলটি জিতেছে ৬৩% ম্যাচ। হেরেছে মোটে ১৭%। বাকিগুলো ড্র।
দলে ছিলেন ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের মত তারকা ফুটবলার। চুয়াত্তর সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করে ঘরের মাঠে জিতেছিল এই দলটিই।
৯. ফ্রান্স (২০০০): দুই বছরে চল্লিশটি আন্তর্জাতিক খেলে জিতেছে ৭৩% ম্যাচ। পরাজয় মোটে ১২%।
এই দলের জিনেদিন জিদান, থিয়েরি অঁরির নাম নিশ্চয়ই সবারই জানা? ২০০০ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি।
https://www.youtube.com/watch?v=IJyH1qkoWRg
৮. আর্জেন্টিনা (২০১০): দলটির বিশ্বকাপ জেতা হয়নি বটে, তবে ৪৮টি আন্তর্জাতিক খেলে জিতেছে ৬০% ম্যাচ।
দলে ছিলেন এখনকার অধিনায়ক লিওনেল মেসি, আনহেল ডি মারিয়া, কার্লোস তেভেজ, গঞ্জালো হিগুয়েন, সের্হিয়ো রোমেরো, ম্যাক্সি রড্রিগুয়েজ প্রমুখ।
https://www.youtube.com/watch?v=r5bpwj7eANc
৭. ব্রাজিল (১৯৭০): ওই বছরের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন এই দলটিতে ছিলেন পেলে, যাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার বলে মনে করেন অনেকেই।
অনেকের মতে এই দলটিই সর্বকালের সেরা ফুটবল দল। তবে সুপার কম্পিউটার স্যামের মতে তা নয়।
৬. নেদারল্যান্ডস (১৯৭৪): ওই বছরের বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানির কাছে হেরে রানার আপ হওয়া এই দলটিকেই সুপার কম্পিউটার স্যাম নির্বাচন করছে সর্বকালের সেরা ফুটবল দলের তালিকায় ষষ্ঠ হিসেবে।
তালিকায় চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম জার্মানিরও ওপরে তারা।
৫. জার্মানি (২০১২): আবারো জার্মানি। তবে এবার একীভূত তারা।
দলে আছেন ম্যানুয়েল নয়্যার, সামি খাদিরা, টনি ক্রুস, ওজিল, মিরোস্লাভ ক্লোসা, টমাস মুলার প্রমুখ।
অনেকেই বলেন, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হবার ভিত্তি তৈরি করেছিল এই দলটিই।
৪. ব্রাজিল (২০১৩): তালিকায় ব্রাজিলের আরো একটি দল। ছিলেন সিলভা, অস্কার, হাল্ক, নেইমার, আলভেজ প্রমুখ।
অবশ্য এখনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবার সুযোগ আসেনি তাদের।
অবশ্য ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে এই দলটিকেই ৭-১ গোলের লজ্জাজনক পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছিল ওই বছরের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি।
৩. স্পেন (২০১০): টিকি-টাকা নামক এক ফুটবল কৌশলের জনক এই দলটি।
দলে ছিলেন ইকার ক্যাসিয়াস, ডেভিড ভিয়া, ফার্নান্দো টোরেস, জেরার্ড পিক প্রমুখ।
ওই বছর এই টিকা-টাকা কৌশল দিয়ে দলটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেও পরের বিশ্বকাপে আর হালে পানি পায়নি কৌশলটি।
https://www.youtube.com/watch?v=QI-TIMwzVCo
২. ব্রাজিল (১৯৯৭): রবার্তো কার্লোস, কাফু, দুঙ্গা, রিভাল্দো, রোনাল্দো, বেবেতো আর রোমারিওর এই দলটি একটি বিশ্বকাপ জিতেছে।
আর্জেন্টিানাকে হারিয়েছে দুবার।
১. হাঙ্গেরি (১৯৫৪): ওই বছরের বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন নয় তারা।
পশ্চিম জার্মানির কাছে হেরে রানার আপ।
কিন্তু সুপার কম্পিউটার স্যামের চোখে এই দলটিই সর্বকালের সেরা দল।
ত্রিশটি ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে ৮০%। হেরেছে মাত্র ৩% খেলায়।টানা ৪ বছর বিশ্বের কোন দেশই হারাতে পারেনি পুসকাস-ককসিসের এই দলকে।
এই দলের কাছে এক বছরে দুবার শোচনীয়ভাবে হেরেছে ইংল্যান্ড। একবার হেরেছে ৭-১ গোলে।