আসাদুজ্জামান: সাতক্ষীরা ন্যাশনাল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শহরের ইটাগাছা রাধানগরস্থ ন্যাশনাল হাসপাতালে শনিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ জিম্মি করে তাদের পাওনা টাকা আদায় করে জোর করে মৃত লাশটি এ্যাম্বুলেন্স যোগে খুলনায় স্থানান্তর করেন বলে নিহতের স্বজনরা জানান।
নিহতের নাম জাকিয়া সুলতানা রাখি (১৯)। সে শহরের সুলতানপুরের আরিফ হোসেনের স্ত্রী। এদিকে, এ ঘটনা জানাজানির একপর্যায়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহতের খালাতো ভাই কামরুজ্জামান জানান, চিকিৎসকের পরিবর্তে ন্যাশনাল হাসপাতালের অদক্ষ নার্স দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত অ্যানাসথেশিয়া প্রয়োগ করায় রাখির আর জ্ঞান ফেরেনি।
তিনি জানান, শনিবার ইফতারের পরে রাখির প্রসব বেদনা উঠলে তার স্বামীসহ স্বজনরা দ্রুত সাতক্ষীরার রাধানগরস্থ ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় সেখানে কতব্যরত চিকিৎসক আবু বকর রোগীকে দ্রুত সিজার করার পরামর্শ দেন। রোগীর স্বজনদের আপত্তি না থাকায় রুগীকে ওটিতে নিয়ে যান। রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে অ্যানাসথেশিয়া চিকিৎসকের পরিবর্তে নার্সদের দিয়ে ইনজেকশান পুশ করে তাকে অজ্ঞান করা হয়।
তিনি আরো জানান, অপারেশন শুরু করা আগেই প্রেসার লো হয়ে রাখির মৃত্যু হয়। অপারেশন টেবিলে তার মৃত্যু নিশ্চিত হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই রুগীকে দ্রুত খুলনা আড়াই’শ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তবে তার আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের পাওনা টকা আদায় করে নেন। খুলনায় নেওয়া হলে সেখানে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা জানান প্রায় আড়াই ঘন্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে রাখির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় হাসপাতাল ঘেরাও করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এঘটনায় পুলিশ চিকিৎসক আবু বকর সহকয়েক জনকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান বলে তিনি জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি এক রুগী জানান, ক্লিনিকে কোন ডাক্তার থাকে না। অল্প কয়েকজন ডাক্তার এখানে এসে রুগী দেখেন। তবে তারা ফোন করার ১/২ ঘন্টা পরে আসেন। তবে, হাসপাতালের সামনে ডাক্তারদের সাইন বোডের বাহার ঠিকই রয়েছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবু বকর এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায় নি। তার ব্যবহৃত ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে, ন্যাশনাল হাসপাতালের পরিচালক হাফিজুর রহমান জানান, রাখির কোন অপারেশন করা হয়নি। হাসপাতালে নেওয়ার পরে প্রেশার লো হয়ে সে মারা যায়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
1 মন্তব্য
এদের বিরুদ্ধে সমস্ত গ্রাহকদের একসাথে আন্দোলন করা উচিত। নিজেদের সম্পত্তি মনে করে এরা যা ইচ্ছা করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। আসলে করবেই বা না কেন এসব মানুষগুলো তো ভাল করে যানে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নাই এই সাতক্ষীরাতে।