রাজনীতির খবর: ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলমের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা চাইতে গিয়ে নির্যাতিত হয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফারজানা ববি নাদিরা (২৫)। এরপর তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি জেলা পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ফারজানা ববি নাদিরা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
নাদিরা ঝালকাঠি জেলা পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেন। কাজের মাধ্যমে শাহ আলমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে জানান তিনি।
নাদিরার অভিযোগ, সরদার মো. শাহ আলম তিন বছর ধরে তাঁকে স্ত্রীর মতো ব্যবহার করলেও আইনগতভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছিলেন না। এ জন্য আজ দুপুর ১২টায় তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার শাহ আলমের কক্ষে গিয়ে বিয়ে করার কথা বলেন। এ খবর পেয়ে বিকেল ৩টার দিকে শাহ আলমের স্ত্রী জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী শাহানা আলম এসে নাদিরাকে মারধর করেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার শাহ আলম তাঁর কক্ষে থেকে বের হয়ে আসতে চাইলে নাদিরা বার বার হাত চেপে ধরেন। তাঁকে যেতে বাধা দেন। এ সময় শাহ আলম তাঁকে ছাড়িয়ে নেন। আবার সামনে দাঁড়িয়ে বাধা দিলে শাহ আলম ধাক্কা দিয়ে নাদিরাকে সরিয়ে দেন। ওই সময় শাহ আলমের লোকজনও নাদিরার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর শাহ আলম দুইতলা থেকে নেমে গাড়িতে ওঠেন। নাদিরাও পিছু নিয়ে গাড়ির দরজা বন্ধ করতে বাধা দেন। নাদিরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাঁকে বিয়ের দাবি জানাচ্ছিলেন। এরপর লোকজন নাদিরাকে গাড়ির দরজা থেকে ছাড়িয়ে নেন। এরপর তিনি দৌঁড়ে গিয়ে জেলা পরিষদের দ্বিতীয় তলার দিকে যেতে চাইলে কয়েকজন তাঁকে বাধা দেয়। এরপরও নাদিরা দৌঁড়ে ওই ভবনের ছাদে যান। পেছন থেকে একজন তাঁকে ধরে ফেলে। এ সময় নাদিরা অচেতন হয়ে পড়ে যান। পরে তাঁকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নাদিরা হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরদার মো. শাহ আলম, সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। উনার সাথে আমার প্রায় তিন বছর ধরে পরিচয়, এই জেলা পরিষদের কাজ নিয়ে। আমি ডিজিটাল সেন্টারে উদ্যোক্তা হিসেবে এখানে জয়েন করি। উনি আমাকে ভালোবাসে এবং উনি আমাকে ভালো পায়। এই জিনিসটা উনি জানে। বিয়ে করবে না কিন্তু উনি যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন নাকি উনার সাথে আমার থাকতে হবে।’
নাদিরা আরো বলেন, ‘আজকে আমি শুধু জেলা পরিষদে গেছি। যাওয়ার পর বলছি দেখেন, পরিস্থিতি তো খুব খারাপ, কী করব? আপনার তো সব আছে। আমার কী হইল, আমার তো কিছুই থাকল না। আপনি আমার জন্য কী করবেন। উনি বলছেন, আমার পক্ষে তো আর বিয়ে করা সম্ভব না। কারণ আমি তো বিয়ে করে তোমার ফিউচার (ভবিষ্যৎ) নষ্ট করে দিব বা অমুক সমুক আমি আর কতদিন বাঁচব। এসব কথাবার্তা বলছে। আমি বলছি দেখেন, আমার ফিউচার লাগবে না। এখন যে অবস্থা, আপনি আমাকে বিয়ে করতে পারেন। আমার তাতে কোনো ফিউচার লাগবে না। আমার তো একটা মানসম্মান ইজ্জত নিয়ে বাঁচতে হবে। আমার পরিবার আছে। আমি পরিবার থেকেও এখন জায়গা পাচ্ছি না। বাসা থেকেই কিছুদিন পরে হয়তো আমাকে বের করে দিবে।’
এ বিষয়ে জানতে মো. শাহ আলমের কাছে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।