খেলার খবর: বেলস তুলে যখন লাঞ্চের ঘোষণা দিলেন আম্পায়াররা, ধারাভাষ্য কক্ষে ইয়ান বিশপ বললেন, “ট্যাকটিক্যালি ও বোলিংয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব।” বাংলাদেশ অধিনায়ক সেই পারফরম্যান্স ধরে রাখলেন লাঞ্চের পরও। বল হাতে গড়লেন রেকর্ড। লাঞ্চের পরপরই গুটিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জ্যামাইকা টেস্টের তৃতীয় দিনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৯ রানে অলআউট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিবিয়ানদের সর্বনিম্ন স্কোর এটিই।
দুর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশের লড়াইয়ে ফেরার নায়ক সাকিব। ৩৩ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট। দেশের বাইরে যা বাংলাদেশের সেরা বেলিংয়ের রেকর্ড।
তবে প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড ছিল ২০৫ রানের। জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ৩৩৫ রান। এই রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশ ৪উইকেট হারিয়ে রানে ধুঁকছে বাংলাদেশ। ক্রিজে আছেন সাকিব ১৩ এবং মুশফিক ০ রানে। আউট হয়েছেন তামিম ইকবাল ০, লিটন দাশ ৩৩, মুমিনুল ১৫ ও মাহমুদুল্লাহ ৪ রান করে।
সফরে আগের তিন ইনিংসে বাংলাদেশ একবারও করতে পারেনি দেড়শ রানও।
আগের দিন শেষ বিকেলে দারুণ ডেলিভারিতে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে বোল্ড করেছিলেন সাকিব। এ দিন সকালও শুরু করেন যেন সেখান থেকেই। ইনিংসের প্রথম চারটি উইকেটই বাংলাদেশ অধিনায়কের। গড়ে তুলতে দেননি কোনো জুটি।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যানকেই ফিরিয়েছেন সাকিব। তবে উইকেট দুটিতে বড় অবদান ছিল নুরুল হাসান সোহানের। ডেভন স্মিথ ও কিমো পলকে দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় স্টাম্পিং করেছেন বাংলাদেশের কিপার।
কাইরান পাওয়েল চেষ্টা করেছিলেন পাল্টা আক্রমণের। একটি চার ও ছক্কায় চাপে ফেলতে চেয়েছিলেন স্পিনারদের। সাকিব ফিরিয়েছেন তাকেও।
উইকেট শিকারে যোগ দেন তাইজুল ইসলামও। দারুণ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করেন শেই হোপকে। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত খেলা শিমরন হেটমায়ারকে ১৮ রানে থামান পেসার আবু জায়েদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ লাঞ্চে গিয়েছিল ৬ উইকেটে ১০৮ রানে। লাঞ্চের পর শেষ চার উইকেট নিতে বাংলাদেশের লেগেছে মাত্র ৯ ওভার।
মূল বাধা হয়ে থাকা রোস্টন চেইস বোল্ড হয়েছেন মিরাজকে সুইপ করতে গিয়ে। মিরাজের বলেই স্টাম্পড হয়েছেন জেসন হোল্ডার।
এই উইকেটে রেকর্ড বইয়ের নাম লিখিয়েছেন সোহান। বাংলাদেশের প্রথম কিপার হিসেবে এক ইনিংসে করেছেন তিনটি স্টাম্পিং।
এরপর শেষ দুটি উইকেট এক ওভারেই নিয়েছেন সাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ ৪ উইকেট হারিয়েছে ৭ রানের মধ্যে।
৩৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে সাকিব পেছনে ফেলেছেন রবিউল ইসলামকে। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়েতে রবিউলের ৭১ রানে ৬ উইকেট ছিল দেশের বাইরে বাংলাদেশের সেরা বোলিং।
বোলিংয়ের পর সাকিবের ব্যাটের দিকেও তাকিয়ে থাকবে দল। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যে এখন ব্যাটিংয়েই!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩৫৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৪৯
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৪৫ ওভারে ১২৯(আগের দিন ১৯/১) (ব্র্যাথওয়েট ৮, স্মিথ ১৬, পল ১৩, পাওয়েল ১৮, হোপ ৪, হেটমায়ার ১৮, চেইস ৩২, ডাওরিচ ১২*, হোল্ডার ১, কামিন্স ১, গ্যাব্রিয়েল ০; আবু জায়েদ ৮-১-২১-১, মিরাজ ১১-২-৪৫-২, কামরুল ২-০-৩-০, সাকিব ১৭-৫-৩৩-৬, তাইজুল ৭-০-২৪-১)।