দেশের খবর: রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত কলেজ শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীম ও আবদুল করিম রাজীবের পরিবারকে বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে ডেকে সান্ত্বনা এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ সময় নিহতদের দুই পরিবারের হাতে অনুদান হিসেবে ২০ লাখ টাকা করে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র তুলে দেন।
তাঁদের সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকের বলেন, ‘সব স্কুলের সামনে স্পিডব্রেকার স্থাপন, সব স্কুলের সামনে প্ল্যাকার্ডধারী বিশেষ ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন, শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কে আন্ডারপাস নির্মাণ এবং ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য পাঁচটি বাস প্রদান করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নূর নাহার ইয়াসমিন প্রধানমন্ত্রীকে জানান, নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানরা তাঁর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে আসে। তাদের যাতায়াতের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাস দেওয়ার অনুরোধ করেন।’প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর মীমের বাবা জাহাঙ্গীর ফকির এবং রাজীবের মা মহিমা বেগম সাংবাদিকদের মাধ্যমে রাজপথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছেন। মীম ও রাজীব নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত রবিবার থেকে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় আন্দোলনে নেমে রাজধানী কার্যত অচল করে রেখেছে। গত দুই দিনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য জেলায়ও।
মীমের বাবা জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবার কাছে আমার অনুরোধ, যার যার সন্তান, আমরা অভিভাবকরা বুঝিয়ে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাই। আমরা একটা শক্ত বিচার পাব, আশা করি। এটা প্রধানমন্ত্রীর নিজের মুখের কথা।’
রাজীবের মা মহিমা বলেন, ‘সবাই আমার সন্তানের জন্য রাস্তায় নেমেছে। সবই হয়ে গেছে। এখন তোমরা যে যার ঘরে উঠে যাও। তোমাদের সবার কাছে অনুরোধ, তোমরা ঘরে ফিরে যাও।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় মীমের বাবা জাহাঙ্গীর ফকির, ভাই-বোন, মা এবং রাজীবের মা মহিমা বেগম, বোন ও পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রিন্সিপাল নূর নাহার ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার আমাদের বাসায় গিয়েছিলেন সমবেদনা জানাতে। তিনিও দোষীদের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা কেউ চাপিয়ে রাখতে পারবে না। এর বিচার হবেই। বিচার হলে আমরা দেশের মানুষ সবাই শান্তি পাব।’ সন্তানহারা এই বাবা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। আমরা খুব কৃতজ্ঞ।’
এ সময় মহিমা বেগমের পাশে থাকা রাজীবের বোন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। আমরা স্যাটিসফাই হয়েছি। তোমরাও স্যাটিসফাই হও। আমরা দোয়া করি, তোমরাও দোয়া করো তোমাদের বন্ধুদের জন্য। সবাই ঘরে ফিরে যাও।’
গত রবিবার ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষার সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস চাপা দিয়ে হত্যা করে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী মীম ও রাজীবকে। ।
স্কুলের সামনে ট্রাফিক পুলিশ স্পিডব্রেকার থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
পূর্ববর্তী পোস্ট