রাজনীতির খবর: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ৩১ অক্টোবরের অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর এই তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনি প্রস্তুতি সেরে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে। এরই অংশ হিসেবে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্বাচনি প্রস্তুতির যেসব কার্যক্রম রয়েছে, তার ৮০ শতাংশই সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের মধ্যে শেষ করবে ক্ষমতাসীন দলটি। আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ক্ষমতাসীন দলের সূত্রগুলো জানায়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন। ওইসময় তার পক্ষে দলীয় কাজে কিছুটা সীমাবদ্ধতা দেখা দেবে। এছাড়া নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রী হিসেবে যারা থাকবেন, তাদেরও কাজের সীমাবদ্ধতা থাকবে। তাই তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনি কাজ গুছিয়ে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের মধ্যে সারাদেশে একাধিক জনসভা করা হবে, যেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাও হবে সেপ্টেম্বরে। ওই বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্বাচন সংক্রান্ত কাজও ভাগ করে দেওয়া হবে। এসব জনসভার মাধ্যমে সারাদেশে নির্বাচনি আওয়াজ তোলা ও দলীয় নেতাকর্মীদের মাঠে সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে। এই দুই মাসে জেলা নেতাদের আরেকবার ঢাকায় ডেকে এনে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া একাদশ সংসদ নির্বাচনে কারা নৌকার টিকিট পেতে পারেন, তাদের সম্পর্কে জেলার নেতাদের ইঙ্গিত দেওয়া হবে। যেন তফসিল ঘোষণার পরই মনোনয়ন বোর্ড যাদের নাম চূড়ান্ত করে জানিয়ে দেবে, পরে যেন প্রার্থিতা নিয়ে মারামারি না হয়, তার পূর্ব-প্রস্তুতির জন্যে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরব্যাপী জেলা নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি ইতোমধ্যে দুই শ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করে রেখেছেন বিভিন্ন সার্ভে রিপোর্টের মাধ্যমে। এই দুই মাসে এসব সার্ভে রিপোর্টের ওপর আরেক দফা কাজ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
জানাগেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই শ আসনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সেখান থেকে ১৭০ আসনে জয়ী হতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি, যেন শক্তিশালী সংসদ ও সরকার গঠনে তাদের কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘সেপ্টেম্বর-অক্টোবর—এই দুই মাসে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তুতির ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই দুই মাস ব্যস্ত সময় পার করবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় দলীয় কাজে তার অনেক সীমাবদ্ধতা থাকবে। তাই দুই মাসে প্রস্তুতি শেষ করা হবে।’
ক্ষমতাসীন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘সেপ্টেম্বর থেকে একাদশ নির্বাচন পর্যন্ত ব্যস্ত সময় থাকবে। বিশেষ করে আগামী দুই মাসে নির্বাচনি প্রস্তুতি শেষ করা হবে।’