অনলাইন ডেস্ক: মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা পরিকল্পনা করেছে, ২০২১ সাল নাগাদ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে। এটি পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরত্বে থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই দুরবিনটি মহাকাশ বিদ্যায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। তারা আশা করছেন, পৃথিবীর কাছাকাছি অন্য কোনো নক্ষত্রের অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা, সেটি এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যাবে। নাসা বলছে, আক্ষরিক অর্থেই এটি অতীত সময়ে নিয়ে যাবে, যার মাধ্যমে বিশ্বব্রহ্মান্ডের প্রথম ছায়াপথ তৈরির বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাবল স্পেস টেলিস্কোপের এই উত্তরসূরি অনেক চমত্কার কিছু দেখাতে যাচ্ছে। কারণ এই টেলিস্কোপে এমন অনেক কিছুই রয়েছে, যা এর আগে আর মহাকাশে পাঠানো হয়নি। প্রায় দশ বিলিয়ন ডলার খরচ করে টেলিস্কোপটি তৈরি করা হয়েছে। এটিকে সংক্ষেপে ডাকা হচ্ছে ‘জেডব্লিউএসটি’ নামে। ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশের কোন নক্ষত্রের কোন গ্রহে প্রাণের উপযুক্ত পরিবেশ আছে কিনা, সেটি এই দুরবিনের মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের মহাকাশ বিজ্ঞানীদের একটি দল এই টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মহাবিশ্বে প্রাণ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাবনা দিয়েছেন। ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের মহাকাশ বিজ্ঞানী জোসুয়া ক্রিসানসেন-টোটন এবং তার দল বোঝার চেষ্টা করছেন প্রাণের চিহ্ন আছে এমন কোনো গ্রহের নমুনা এই টেলিস্কোপটি শনাক্ত করতে পারে কিনা। টেলিস্কোপটি আলোর ক্ষেত্রে এতটাই সংবেদনশীল যে, গ্রহের আবহাওয়ার ভেতর রাসায়নিক কোন নড়াচড়া থাকলে এটি তা শনাক্ত করতে পারবে। যেমন পৃথিবীর আবহমণ্ডলে বেশ কয়েকটি গ্যাসের আস্তরণ রয়েছে। এর অনেকগুলো পৃথিবীর জীবনের কারণে তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এখন সেসব গ্রহে এরকম গ্যাসের সন্ধান করবেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই টেলিস্কোপ দিয়ে তারা প্রথমে নজর দিতে চান ট্রাপিস্ট-১ নামের একটি নক্ষত্রের দিকে, যেটি সূর্য থেকে ৩৯ দশমিক ৬ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। ২০১৭ সালে এই নক্ষত্রটি বেশ আলোড়ন তৈরি করেছিল। কারণ এর গঠন অনেকটা আমাদের সৌরজগতের মতো। এর সাতটি গ্রহের কয়েকটিতে তরল পানি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তেমন হলে তা প্রাণ থাকার জন্য আদর্শ পরিবেশ। এখন ২০২১ সালে টেলিস্কোপটি মহাকাশে পাঠানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, এটি আমাদের জন্য কী কী চমকপ্রদ তথ্য দিতে পারবে।-বিবিসি।