দেশের খবর: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে ইউজিসিকে শিক্ষার মান নির্ধারণ, তদারকিসহ বিশ্ববিদ্যালগুলোতে জবাবদিহি বাড়াতে আরো উদ্যোগী হতে বলেছেন।
রাষ্ট্রপতি আজ বিকেলে নগরীর একটি হোটেলে নবম ইউজিসি পদক প্রদান অনুষ্ঠানে ভাষণকালে বলেন, উচ্চ শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে আরো উদ্যোগী হতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ উচ্চ শিক্ষার প্রত্যেক স্তরে মূল্যায়ন ও তদারকি এবং এক্ষেত্রে ইউজিসি কর্তৃপক্ষের জোরালো ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এর আগে কয়েকটি পৃথক বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের কর্তৃপক্ষকে তাঁর দেয়া নিদের্শনার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে ইউজিসি এসব নিদের্শনা ও সামগ্রিক উন্নয়নের বিষয় প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কঠোরভাবে মনিটর করবে।
তিনি ইউজিসি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর কেউ যেন শিক্ষিত ও অভিজাত বেকারে পরিণত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান ৩৯ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যায় বাংলাদেশের স্থান বিশ্বে চতুর্থ। সময়োপযোগী শিক্ষানীতি ও এর সফল বাস্তবায়নের সুবাদে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। তিনি দেশে উচ্চ শিক্ষার বিস্তারে বেসরকারি খাতের অবদানের প্রশংসা করার পাশাপাশি একথাও বলেন যে, শিক্ষার নামে বাণিজ্য কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশ, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুণগত শিক্ষা প্রদান ব্যহত হচ্ছে।
তিনি মানসম্পন্ন শিক্ষা ও উন্নত গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এটি হচ্ছে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। শিক্ষক ও গবেষকগণ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে মানসম্পন্ন শিক্ষাদান ও উন্নয়নে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে একথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতি আশা করে আপনারা (শিক্ষক ও গবেষক) মেধার জগতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবেন।
তিনি শিক্ষার পাশাপাশি সমসাময়িক জ্ঞান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে শিক্ষক ও গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতি গঠনে অবদান রাখার জন্যও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিভিন্ন গবেষণাভিত্তিক প্রকাশনায় অসামান্য অবদান রাখার জন্য ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ইউজিসি পুরস্কার (স্বর্ণপদক) প্রাপ্ত ৩৫ ব্যক্তিকেও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ইউজিসি’র এই পুরস্কার নিঃসন্দেহে শিক্ষক ও তরুণ গবেষকদের তাদের গবেষণা কাজে প্রেরণা যোগাবে।
শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রভাষক অর্পিতা শামস মিজান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজ বেগম অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
উচ্চ শিক্ষার মান বাড়াতে আরো উদ্যোগী হতে হবে : রাষ্ট্রপতি
পূর্ববর্তী পোস্ট