অনলাইন ডেস্ক: রাষ্ট্র পরিচালনা্র জন্য একজন রাষ্ট্রপ্রধানের ভুমিকা অনেক বেশি । দ্বায়িত্ব পালন করতে নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও নিজের অবস্থান জনগণের কাছে পৌছাতে হয়।জনপ্রিয়তা, দক্ষতা এবং জনগণের চাওয়া পাওয়া সবকিছু রক্ষা করে একজন রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে নিজের ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা বিশ্বের প্রায় সব রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যেই ছিল বা আছে। দীর্ঘদিন টানা রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে ক্ষমতায় থাকার নজির খুব কম রয়েছে, তবে কিছু ব্যতিক্রম নজিরও রয়েছে যেখানে কিছু রাষ্ট্রনায়ক প্রায় কয়েক যুগ ধরে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন।বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে হতে এরকম ৭ জন রাষ্ট্র প্রধানের ইতিহাস তুলে ধরা হলো-
ফ্রিদেল কাস্ত্রো, কিউবা: ফিদেল আলেজান্ড্রো কাস্ত্রো রুজ ছিলেন একজন কিউবান কমিউনিস্ট বিপ্লবী এবং রাজনীতিবিদ । তিনি ৪৯ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত কিউবার প্রজাতন্ত্রকে শাসন করেছিলেন তিনি এবং ১৯৭৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এবং ২০০৮ সালে ফিদেল আলেজান্ড্রো কাস্ত্রো বয়স ছিল ৮০ বছর এবং তখন তিনি তাঁর ভাই ‘রাউল কাস্ত্রো’ এর ওপর ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
ফিদেল আলেজান্ড্রো কাস্ত্রো ১৯২৬ সালের, ১৩ আগষ্ট কিউবায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ২৫ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে কিউবায় মৃত্যুবরণ করেন।
চিয়াং কাই-শেক, চীন: তাইওয়ান এর প্রথম রাষ্ট্রপতি, চিয়াং কাই-শেক ১৯৭৫ সালে তার মৃত্যু পর্যন্ত ৪৭ বছর ধরে দ্বীপ ও মূল ভূখণ্ডের দায়িত্বে ছিলেন। চিয়াং কাই-শেক, ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ এবং সামরিক নেতা যিনি ১৯২৮ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে চীনের প্রজাতন্ত্রের নেতা হিসেবে প্রথম প্রধান ভূখণ্ড চীন পর্যন্ত ছিলেন।
চিয়াং কাই-শেক, ১৮৮৭ সালের ৩১ অক্টোবর চীনে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ৫ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
কিম ইল-সুং, উত্তর কোরিয়া: উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সুং প্রায় ৪৯ বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিলেন। অফিসে কর্মরত অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন তাই এখনও তাকে ‘শাশ্বত নেতা’ হিসেবে সম্মানিত করা হয়।
কিম ইল-সুং উত্তর কোরিয়ার প্রথম এবং জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত প্রিমিয়ার পদে এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন। তিনি শ্রমিকদের নেতা ছিলেন। ১৯৪৯ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত তিনি কোরিয়ার ওয়ার্কারস পার্টির নেতা ছিলেন। কিম ইল-সুং, ১৫ এপ্রিল ১৯১২ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৮ জুলাই ১৯৯৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
এনভার হ্যালিল হোক্সা, আলবেনিয়া: এনভার হ্যালিল হোক্সা প্রায় ৪০ বছর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি ছিলেন আলবেনিয়ান কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ যিনি ১৯৪৪ সাল থেকে আলবেনিয়া রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে কাজ করেছিলেন, ১৯৮৫ সালে তার মৃত্যু পর্যন্ত আলবেনিয়ায় শ্রম পার্টির প্রথম সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৪৪ সাল থেকে আলবেনিয়াতে গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এবং সশস্ত্র বাহিনীর অধিনায়ক-প্রধান ছিলেন।
এনভার হ্যালিল হোক্সা এর জন্ম ১৯০৮ সালোর ১৬ অক্টোবর, এবং মৃত্যু ১৯৮৫ সালের ১১ এপ্রিল।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি, লিবিয়া: মুয়াম্মার আবু মিনার গাদ্দাফি, যিনি সাধারণত কর্নেল গাদ্দাফি নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি প্রায় ৪২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন এবং ২০১১ সালের বিদ্রোহীদের হাতে তিনি নিহত হন। গাদ্দাফি লিবিয়ার বিপ্লবী, রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক তাত্ত্বিক ছিলেন।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি ১৯৪২ সালের ৭ জুন লিবিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর বিদ্রোহীদের হাতে তিনি নিহত হন।
ওমর বঙ্গো, গাবান: এল হাদজ ওমর বঙ্গো গাবানের একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন, যিনি গাবনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং ১৯৬৭ সাল থেকে ২০০৯ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত প্রায় ৪১ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। ওমর বঙ্গোকে ১৯৬০ এর দশকে গ্যাবনের প্রথম প্রেসিডেন্ট লেওন ম্বার অধীনে একটি যুব কর্মকর্তা হিসাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। এবং ১৯৬৬ সালে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
ওমর বঙ্গো, ১৯৩৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৯ সালের ৮ জুন মৃত্যুবরণ করেন।
রবার্ট মুগাবে, জিম্বাবুয়ে: রবার্ট মুগাবে ১৯৮০ সালে ক্ষমতায় আসেন এবং ৩৭ বছরের শাসনামলে জিম্বাবুয়ে শীর্ষস্থানীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন। রবার্ট গ্যাব্রিয়েল মুগাবে একজন জিম্বাবুয়ে বিপ্লবী এবং রাজনীতিবিদ যিনি ১৯৮০ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং ১৯৮৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে কাজ করেছিলেন।
রবার্ট মুগাবের জন্ম ১৯২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।
তথ্যসূত্রঃ আলজাজিরা, উইকিপিডিয়া