অনলাইন ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে নির্বাচন কমিশন সাংবাদিকদের জন্য যে নীতিমালা জারি করেছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র নেতৃবৃন্দ।
বিশেষ করে নির্বাচনের দিন ও আগে-পরে মিলিয়ে ৪ দিন সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহার ও ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বপালনে প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নেয়ার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী নির্বাচন কমিশনের কোন বিধিনিষেধ সাংবাদিক সমাজ মানবে না।
রোববার (২৩ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছেন এ সংগঠন দুটির নেতারা।
তারা বলেন, সাংবাদিকরা দেশের প্রচলিত আইন ও সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুসরণ করে অতীতের মতো স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে। অবিলম্বে নীতিমালার নামে জারি করা বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম (২৩ ডিসেম্বর) এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা সব সময় সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। অথচ বর্তমান নির্বাচন কমিশন বার বার নানা বিধিনিষেধের বেড়াজালে সাংবাদিকদের আটকানোর অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের সময়ও বিতর্কিত আদেশ জারি করে সমালোাচিত হয়েছে।
নেতারা আরও বলেন, সাংবাদিকরা কারো পক্ষ বা প্রতিপক্ষ নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন করে, তেমনি সাংবাদিকরাও তাদের পেশাগত দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। মূলধারার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করলে গুজব ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ডালপালা মেলে, এটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকে অনুধাবন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের বিতর্কিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নীতিমালা মানতে সাংবাদিক সমাজ বাধ্য নয়।
বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে প্রধান বাহন হচ্ছে মোটরসাইকেল। কারণ দ্রুততম সময়ে স্পটে পৌঁছতে এবং অলিগলিতে থাকা ভোট কেন্দ্রে যেতে মোটরসাইকেলের কোনো বিকল্প নেই। মোটরসাইকেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা মানে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বপালনে অনাকাঙ্ক্ষিত বাধা। সাংবাদিকরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে বা স্বাধীনভাবে দায়িত্বপালন করে সুষ্ঠু নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে এমন কোনো নজীর নেই।
উল্লেখ্য, ২১শে ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন জারি করা এক নীতিমালায় ভোটের সময় মোটরসাইকেল চালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এক্ষেত্রে ২৯শে ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২রা জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত, ক্ষেত্র বিশেষ আরও অধিককাল মোটরসাইকেল বা অনুরূপ যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগে পরে মোট চার দিন সাংবাদিকরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন না।