সেলিম হোসেন: স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিএমএ সাতক্ষীরা জেলা শাখার আয়োজনে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বিএমএ’র কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএমএ জেলা সভাপতি ডাঃ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম, স্বাচিপ এর জেলা সভাপতি ও সাবেক সাংসদ ডাঃ মোখলেছুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের তত্বাবধায়ক ডাঃ শাহজাহান, ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক এসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ হাবিবুর রহমান, ডাঃ শামছুর রহমান, ডাঃ মনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী, এম কামরুজ্জামান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রোগীদের সেবা দানের প্রধান অন্তরায় হলো জনবল সংকট। যে পরিমাণ ডাক্তার হাসপাতালে প্রয়োজন সে তুলনায় ডাক্তার সদর হাসপাতালে নেই। তার মধ্যে গড়ে উঠেছে অবৈধ ক্লিনিক ও দালাল ব্যবসা। এদের দ্বারা রোগীরা প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবার জন্য হাসপাতালে ও ক্লিনিকে রোগীদের সেবা দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে বলা আছে ক্লিনিকে মাত্র তিন ধরনের সেবা দিতে পারবে। আর হাসপাতালে দেওয়া হয় সব ধরনের সেবা।
অবৈধ ক্লিনিক গড়ে কারণ হিসেবে এসোসিয়েশনের সভাপতি উল্লেখ করেন, ক্লিনিক অনুমোদন দেওয়ার জন্য কমিটি থাকে। উক্ত কমিটির পক্ষ থেকে যাদের পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় তারা যে ধরনের রিপোর্ট দেন তারই প্রেক্ষিতে ক্লিনিকের অনুমোদন দেওয়া হয়। যার ফলে ভ্যান-রিক্সা চালকদের মত লোকেরাও ক্লিনিকের মালিক হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সরকারি ডাক্তারদের দোহাই দিয়েই ব্যাঙের ছাতার মত অবৈধ ক্লিনিক গড়ে উঠছে। এজন্য এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে খুব তাড়াতাড়ি ক্লিনিক মালিকদের চিঠি দেওয়া হবে যাতে করে সকাল ৮ থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এর মধ্যে যেন কোনো সরকারি ডাক্তারদের না ডাকা হয়। সাতক্ষীরা একেকজন চিকিৎসকের নাম প্রতিটি ক্লিেিনর ঝুলানো আছে। যেটা বন্ধ করা অতিব জরুরী।
চিকিৎসকদের হাসপাতালে রোগী দেখার বিষয় সিভিল সার্জন বলেন, আমি হাসপাতালে যোগদান করার পর ডাক্তাররা যাতে ক্লিনিকে অফিস সময়ে রোগী না দেখে সে বিষয় চিঠি দিয়েছিলাম। তার পরেও অনেকেই রোগী দেখছেন।
বক্তারা আরো বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে এনাটমি, ফিজিওলোজীর কোনো শিক্ষকই নেই। যদিও কোনো শিক্ষকদের আনা হচ্ছে তারা চলেও যাচ্ছে দ্রুত। পরীক্ষা ছাড়া কোনো রোগীর সুষ্ঠু চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। রোগীর প্রকৃত সেবার মান নিশ্চিত করতে সারা বিশ্বে পরীক্ষা চলে। আগে আমাদের মানুষিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। এক তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সাতক্ষীরা শহরে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক হচ্ছে সে দিকে কারোর খেয়াল নেই। সব দোষ শুধু ডাক্তারদের। এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। হাসপাতালে জনবল বৃদ্ধি ও সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ লেখনিই পারে সাতক্ষীরা বাসীর স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করতে।