রাজনীতির খবর: উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া মন্ত্রী, এমপি ও পদস্থ নেতাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি দলকে চাঙ্গা করতে মাসব্যাপী সাংগঠনিক সফর করবে দলটি। উপজেলায় বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যাদের নৌকার প্রার্থী পছন্দ হয়নি এবং যারা বিরোধিতা করেছেন তারা নিজেরা আর ভবিষ্যতে নৌকার প্রার্থী হতে পারবেন না।
দলটির শুক্রবারের (৫ মার্চ) কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এদিন রাতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা স্ব স্ব বিভাগের কোন উপজেলায় কোন মন্ত্রী, এমপি ও পদস্থ নেতা দল মনোনীত প্রার্থীদের বিরোধিতা করেছেন, সে প্রতিবেদন তুলে ধরেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর দলের সভাপতি বিরোধিতাকারীদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘যিনি নৌকার বিরোধিতা করেছেন, তিনি আর কখনও নৌকা পাবেন না। বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে এসব ব্যক্তিদের প্রাথমিক শাস্তিস্বরুপ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
এছাড়া আজকের বৈঠকে দলের আগামী সম্মেলন চলতি কমিটির মেয়াদ শেষে অক্টোবরে যথাসময়ে সম্পণ্নের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলনের সার্বিক বিষয় জানতে চাওয়া হয় বৈঠকে। তখন বিভাগীয় যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা এ সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সাত দিন সময় চেয়ে নেন। তবে, আলোচনায় তাৎক্ষণিকভাবে যেসব জেলা-উপজেলায় সম্মেলন না হওয়ার তথ্য উঠে আসে, সেসব স্থানে দ্রুত সম্মেলন সম্পণ্নের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া দলের তৃণমূলের সার্বিক অবস্থা জানতে কেন্দ্রীয় নেতাদের মাসব্যাপী সারাদেশ সফরের সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে ইকরামুল হক টিটুকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেওয়া হলেও কাউন্সিলর পদে কাউকে মনোনয়ন না দিয়ে উম্মুক্ত রাখা হয়। আজকের বৈঠকে দলের আগামী সম্মেলন এবং ‘মুজিব বর্ষ’পালনের লক্ষ্যে গঠিত আটটি কমিটি চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও তা আরও সংযোজন-বিয়োজন করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর এসব কমিটি চূড়ান্ত হলে বৈঠক করে ‘মুজিব বর্ষ’ পালনের কর্মসূচি নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্রমতে, বৈঠকে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা অনেক নেতার ওপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকে এলাকায় যান বা বিভাগ, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যান, ঘুরে-ফিরে খাওয়া-দাওয়া করে চলে আসেন, দলের কাজ করেন না।’ তিনি বার বার নেতাদের মনে করিয়ে দেন, তৃণমূলই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি, তাই তৃণমূলকে শক্তিশালী রাখতে হবে, তৃণমূলে কোনও বিভেদ সহ্য করা হবে না, যারা বিভেদ সৃষ্টি করবেন, তাদের কঠোর শাস্তিুর মুখে পড়তে হবে।