নিজস্ব প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার জাফরপুরের কাজী আলাউদ্দীন ডিগ্রি কলেজে ঢুকে ছাত্র-শিক্ষকদের লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কলেজটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
বুধবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টায় কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে স্থানীয় সন্ত্রাসী ও বখাটে মামুন, হাফিজুর, তারেক, আশরাফুল, ইসমাইল, আজমির কতৃক কলেজের ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি জানানো হয়।
কাজী আলাউদ্দীন ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আহম্মাদ আলী সরদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ আরিফ বিল্ল্যাহ, কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি ও সিনিয়র প্রভাষক সাজেদুল বারি, শিক্ষার্থী ফয়সাল আহম্মেদ (২য় বর্ষ), অনিক কুমার পাল (১ ম বর্ষ) ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামসহ প্রমুখ।
বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বহিরাগত বখাটেদের দ্বারা আগামীতে যেন এই কলেজের পরিবেশ নষ্ট না হয় ও হামলাকারীদের শাস্তির দাবি নিয়ে আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা আজ রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। এই প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ একটি ইতিহাস-ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা সেটি রক্ষা করবো।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব বখাটে কিশোর গ্যাংদের প্রশ্রয় দেন স্থানীয় তারালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. এনামুল হোসেন ছোটন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এনামুল হোসেন ছোটন বলেন, অভিযুক্তরা আমার কাছে এসেছিল। তবে, আমি তাদের কলেজের শিক্ষকদের সাথে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছি। যদি বহিরাগত কেউ কলেজে ঢুকে শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে, তাহলে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।
উল্লেখ্য, দুই শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটির জেরে গেল সোমবার (০৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় স্থানীয় বখাটেরা কলেজে প্রবেশ করে ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর হামলা করে। এসময় কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শংকর কুমার, ক্রীড়া প্রভাষক আরিফুর রহমান ও উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অপু স্বর্ণকার গুরুতর আহত হন।
কলেজ সূত্রে জানা যায, কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের সাব্বির হোসেন (চাম্পাফুল) ও প্রথম বর্ষের (বিএম) হাফিজুল ইসলামের (ঘুশুড়ী) মধ্যে তুচ্ছ ঘটনার জেরে কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাফিজুর ইসলাম কলেজ গেটের বাহিরে গিয়ে স্থানীয় বখাটে মামুন, আজমির, হাফিজুর, তারেক, ইসমাইল, আশরাফুলসহ ১০-১৫ জনকে নিয়ে সাব্বির হোসেনের ওপর আক্রমণের জন্য কলেজগেটে অবস্থান নেয় এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
এসময় পুরো কলেজ ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। নারী শিক্ষার্থীদের ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। কলেজের অধ্যক্ষ মো. আরিফ বিল্লাহসহ অনান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মীমাংসার জন্য এগিয়ে গেলে ওই বখাটেরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়ে হামলা করে। কোন উপায় না পেয়ে কলেজ কতৃপক্ষ স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করলে তাৎক্ষণিক কালিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরবর্তীতে কলেজ কতৃপক্ষ স্থানীয় থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের নামে মামলা দায়ের করে।