নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় যুব নেতৃত্বে দুর্যোগ মোকাবেলায় দুর্যোগের স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি) বিষয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সদর উপজেলা ডিজিটাল কর্নারে এ ডায়ালগের আয়োজন করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডো। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছেন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিডো’র প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাস। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদ।
ডায়ালগে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: শাহিনুল ইসলাম, ফিংড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান, ব্রম্মরাজপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা, ফিংড়ি ইউনিয়নের সচিব এস এম আলকাজ আলী, দৈনিক প্রথম আলো’র নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি এবং স্বদেশ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত। এছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় যুব প্রতিনিধিরাও ডায়ালগে অংশ নেন।
ডায়ালগে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সিডো’র প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাস। প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: তহিদুজ্জামান (তহিদ)। দুর্যোগের স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি) এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যক্রম বিষয়ে একটি প্রাঞ্জল উপস্থাপনা দেন এক্টিভিস্টা মাসুদ রানা।
এছাড়া আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন একশনএইড বাংলাদেশ-এর ইন্সপিরেটর সুপ্তি দাশ চৈতী, সাতক্ষীরা ইয়ুথ হাবের সভাপতি সাকিব হোসেন, সদস্য শাহনাজ পারভীন ও হৃদয় মন্ডল। তারা যুবদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণের সুযোগ এবং প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন।
ডায়ালগে আলোচকরা বলেন, সাতক্ষীরা একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। এখানে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও নদীভাঙনের মতো দুর্যোগ প্রায়ই ঘটে। এসব দুর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় জনগণ, বিশেষ করে যুব সমাজকে সচেতন ও প্রশিক্ষিত করে তোলা জরুরি।
অতিথিবৃন্দ আরও বলেন, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে যুবদের সম্পৃক্ত করা হলে তৃণমূল পর্যায়ে দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রস্তুতি কার্যক্রম আরও কার্যকর হবে। এই ধরণের ডায়ালগ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারের সঙ্গে যুবদের সংযোগ স্থাপন করে একটি কার্যকরী সমন্বয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
এ সময় উপস্থিত যুব প্রতিনিধিরা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে তাদের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব দেন, যা আগামীতে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডায়ালগে আলোচনায় উঠে আসে, শুধু দুর্যোগকালীন প্রতিক্রিয়া নয় বরং দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি ও সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও যুবকদের সক্রিয় ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। তাদের জন্য প্রশিক্ষণ, অবকাঠামোগত সহায়তা এবং স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে সামগ্রিকভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব।
ডায়ালগের শেষাংশে একটি খোলামেলা প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মতামত, অভিজ্ঞতা এবং সুপারিশ তুলে ধরেন। সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এ ধরনের কার্যক্রম আরও বিস্তৃত ও নিয়মিতভাবে আয়োজন করা গেলে সাতক্ষীরার মতো দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে। এছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করার জোর দাবি জানানো হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এক্টিভিস্টা মাসুদ রানা।