নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় গ্রীষ্মকালীন স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফুটবল খেলার সেমিফাইনালে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল চারটায় সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ডি.বি ইউনাইটেড হাই স্কুল ও ভারুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বিকাল ৩টায় প্রথম সেমিফাইনাল খেলা শুরু হয়। খেলার দ্বিতীয়ার্ধের ১৫ মিনিটের মাথায় ডি.বি ইউনাইটেড হাই স্কুলের একজন খেলোয়াড় ফাউল করলে রেফারি বাঁশি দেন। এ সময় ভারুখালী স্কুলের শিক্ষক মোঃ গোলাম রবি মাঠের বাইরে থেকে ছুটে এসে ওই খেলোয়াড়ের উপর চড়াও হন। এসময় ডি.বি. স্কুলের সমর্থক ও ওই শিক্ষকের মধ্যে বাকবিতন্ড সৃষ্টি হয়। তখন ভারুখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ও ডি.বি স্কুলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সাতক্ষীরা সরকারি বালক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডি.বি স্কুলের দর্শক ও খেলোয়াড়দের ওপর হামলা চালায়। এতে ডি.বি স্কুলের ৩ জন খেলোয়ায় ও বেশকিছু সমর্থক আহত হন।
তারা আরও জানান, খেলায় কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং খেলা বন্ধ হয়ে যায়।
মাঠে উপস্থিত অভিভাবক ও দর্শকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারি স্কুল মাঠে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলা অনুষ্ঠিত হলেও মাঠে কোনো পুলিশ বা প্রশাসনের উপস্থিতি ছিল না। ফুটবল একটি জনপ্রিয় খেলা। এখানে বিপুলসংখ্যক দর্শক উপস্থিত থাকেন, ঝামেলা হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। অথচ কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এমন খেলা কেন পরিচালনা করছে।’
এ ঘটনায় ডি.বি. স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক কঙ্কন কুমার দাস বলেন, ‘খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে জন্য অপরিহার্য, কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকলে তা বরং বিপর্যয় ডেকে আনে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই মাঠে এমন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’ এ ঘটনায় আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ প্রশাসন ছাড়ায় ফুটবলের মত এমন একটি উত্তেজনাপূর্ণ খেলা কেন পরিচালনা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে খেলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান টুকু জানান, খেলার আয়োজক উপজেলা শিক্ষা অফিস। আপনি দয়া করে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করুন। আমাদের একটি শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে আমি সেখানে আছি।
অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম রবি বলেন, আমি চেয়েছিলাম যাতে কোন সমস্যা না হয়। এখন দেখছি পরিস্থিত ভিন্ন। আমি আমার ছাত্রদের শান্ত করার চেষ্টাও করেছি।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) আবুল হোসেন জানান, বিষয়টি মিটে গেছে। আগামী খেলায় প্রশাসনের উপস্থিতি থাকবে যাতে এ ধরনের কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে।
স্থানীয় ক্রীড়ামহল দ্রুত এঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভবিষ্যতের খেলায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।