বাড়িতে শৌচাগার নেই। তাই দিনের পর দিন ধরে লজ্জার মাথা খেয়ে দিনেদুপুরে প্রাকৃতিক কাজ সারতে ছুটতে হয় বাড়ির আশাপাশের ঝোপঝাড়ের আড়ালে। বারবার বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণের কথা বলেও কর্ণপাত করেনি কেউই। তাই বাধ্য হয়ে নিজেই শ্বশুরমশাইকে থানায় টেনে নিয়ে গেলেন বৌমা। তারপর রীতিমতো থানায় গিয়ে পুলিশের সামনে শ্বশুরমশাইকে দিয়ে বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণের জন্য বন্ডে সই করিয়ে মুক্তি দিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যের মুজাফফরপুর জেলার মীনাপুর ব্লকের ছেজ্ঞননেউরা গ্রামে। শ্বশুরবাড়িতে শৌচাগার না থাকায় মুজাফফরপুরের নারী পুলিশ স্টেশনে শ্বশুর ও ভাসুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।
ওই গৃহবধূ জানান, বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণের জন্য তিনি বারবার শ্বশুর ও ভাসুরের কাছে অনুরোধ করেও কোনো ফল পাননি। তাঁর অনুরোধে কেউই কর্ণপাত করেননি। ফলে ঝোপঝাড়ে প্রাকৃতিক কাজ সারার ভয়ে বছরের বেশির ভাগ সময়ই বাপের বাড়িতে কাটাতে বাধ্য হন ওই গৃহবধূ।
ওই নারী জানান, তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে তামিলনাড়ুতে থাকেন। বছরে দু-একবার বাড়িতে ফেরেন তিনি। স্বামী বাড়িতে ফিরলেই একমাত্র ওই গৃহবধূ শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। এরপর স্বামী কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনিও ফিরে যান তাঁর বাপের বাড়িতে। দিনের পর দিন ধরে এই সমস্যা চলতে থাকায় অগত্যা শ্বশুর ও ভাসুরের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।
গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ অভিযুক্ত শ্বশুর ও ভাসুরকে থানায় ডেকে পাঠায়। সেখানে গৃহবধূর চাপের মুখে পুলিশের কাছে শ্বশুরমশাই বন্ডে সই করে জানান, শিগগির তিনি বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণ করবেন। পুলিশ অবশ্য এক সপ্তাহের মধ্যে শৌচাগার নির্মাণের নির্দেশ দিলেও শ্বশুর আবেদন জানিয়ে বলেন, শৌচাগার নির্মাণের জন্য অর্থ জোগাড় করতে কিছুদিন সময়ের প্রয়োজন। সেই সময় যাতে তাঁকে দেওয়া হয়। এরপর গৃহবধূ শ্বশুরের সেই কথামতো থানা থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার করেন।