স্বাস্থ্য কণিকা: আপনি কি প্রায়ই অ্যান্টাসিড ওষুধ খেতে খেতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন? পাকিস্থলির গ্যাস্ট্রিক গ্ল্যান্ডে অতিরিক্ত এসিড নিঃসরণ হলে পেটে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয়। সাধারণত খাবার খাওয়ায় দীর্ঘ বিরতি, খালি পেটে থাকা বা অতিরিক্ত চা, অ্যালকোহল বা কফি পানের কারণে পেটে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এছাড়া মশলাদার খাবার খাওয়া, ভাজা-পোড়া খাবার, খাবার খাওয়ায় অনিয়ম, অতিরিক্ত মদপান, স্ট্রেস, ধুমপান, রাতে ঘুামনোর সময় খাবার খাওয়া, খাবার খাওয়ার পরপরাই শুয়ে পড়া প্রভৃতি কারণেও পেটে গ্যাস হতে পারে। গ্যাসের কারণে পেট ফুলে যাওয়া, বুকে জ্বালা-পোড়া, হেঁচকি ওঠা, ঢেকুর এবং ওগরানোর মতো সমস্যা হতে পারে। তবে এমন ১০টি ঘরোয়া ওষুধ রয়েছে যেগুলো আপনাকে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থেকে চিরদিনের জন্য মুক্তি দিতে পারে।
১. কলা
এতে আছে প্রচুর পটাশিয়াম এবং প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা এসিড রিফ্লাক্সের বিরুদ্ধে একটি বাফার বা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন একটি করে কলা খেলেই আপনার আর কখনো গ্যাস-অম্বলের সমস্যা হবে না।
২. তুলসি পাতা
তুলসি পাতা পাকস্থলিতে শ্লেষ্মার মতো পদার্থ উৎপাদন বাড়াতে উদ্দীপনা যোগায়। এর রয়েছে শীতলীকরন এবং বায়ুনাশক উপাদান যা গ্যাস্ট্রিক এসিডের কার্যকারিতা কমাতে সহায়ক। গ্যাসের সমস্যা হলেই ৫-৬টি তুলসি পাতা চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। অথবা ৩-৪টি তুলসি পাতা সেদ্ধ করে পানিটুকু মধু দিয়ে পান করুন।
৩. দারুচিনি
বেশিরভাগ হজমজনতি সমস্যার ওষুধ দারুচিনি। এতে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় এবং শোষণক্রিয়াকে শক্তিশালি করে। আধা চা চামচ দারুচিনি গুড়ো এক কাপ পানিতে মিশিয়ে সেদ্ধ করে নিন। এরপর ঠাণ্ডা করে পান করুন। প্রতিদিন এভাবে তিনবার দারুচিনি জুস পান করুন।
৪. পুদিনা পাতা
এসিড নিঃসরণের গতি কমায় এবং হজম ক্ষমতা বাড়ায় পুদিনা পাতা। এই পাতার একটি শীতলীকরণ প্রভাবও আছে। যা এসিড রিফ্লাক্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যথা এবং জ্বালাপোড়া কমায়। কয়েকটি পুদিনা পাতা কুচি কুচি করে একটি পাত্রে পানি নিয়ে সেদ্ধ করে নিন। এরপর পানিটুক ছেঁকে ঠাণ্ডা করে পান করুন।
৫. মৌরি বীজ
তাৎক্ষণিকভাবে এসিড কমিয়ে স্বস্তি এন দেয় মৌরি বীজ। খাবার খাওয়ার পর এই বীজ চিবিয়ে খেলে এই উপকার পাওয়া যায়। বদহজম এবং পেট ফাঁপার চিকিৎসায়ও এটি বেশ কার্যকর। আধাকাপ পানিতে কয়েকটি মৌরি বীজ নিয়ে সেদ্ধ করে পানিটুকু পান করুন।
৬. ঘোল
এটি তাৎক্ষণিকভাবে এসিড কমিয়ে স্বস্তি এনে দেয়। এতে থাকা ক্যালসিয়াম পাকস্থলিতে এসিড জমা হওয়া প্রতিরোধ করে। এর সঙ্গে গোল মরিচ যোগ করলে আরো ভালো ফল পাওয়া যাবে। এতে থাকা ল্যাকটিক এসিড হজম প্রক্রিয়াকেও শক্তিশালী করে।
৭. লবঙ্গ
এটি পাকিস্থলিতে গ্যাস উৎপাদন প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে আপনি গ্যাসের সমস্যা চিরতরে থেকে মুক্তি পাবেন।
৮. ডাবের পানি
ডাবের পানি পাকস্থলিতে শ্লেষ্মা উৎপাদনে সহায়ক। যা পাকস্থলিকে অতিরিক্ত গ্যাস সৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে দেহের পিএইচ অ্যাসিডিক লেভেল ক্ষারীয় হয়ে যায়। ফলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দূর হয়।
৯. ঠাণ্ডা দুধ
ঠাণ্ডা দুধ খেলে পাকস্থলির গ্যাস্ট্রিক এসিড স্থিতিশীল হয়ে আসে। দুধে আছে ক্যালসিয়াম যা পাকস্থলিতে এসিড তৈরি প্রতিরোধ করে। সুতরাং অ্যাসিডিটির সমস্যা হলেই এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করুন।
১০. এলাচ
এলাচ হজম ক্ষমতা বাড়াতে এবং পাকস্থলির খিঁচুনি দূর করতে সহায়ক। এটি অতিরিক্ত এসিড নিঃসরণের কুপ্রভাব দূর করে। দুটি এলাচ গুড়ো করে পানিতে সেদ্ধ করে পানিটুক পান করে নিন।
গ্যাসের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে ১০টি ঘরোয়া ওষুধ
পূর্ববর্তী পোস্ট