নিজস্ব প্রতিবেদক :
আশাশুনির চিহ্নিত জামায়াত ক্যাডার ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যা ও আশরাফ হত্যা মামলাসহ প্রায় ২৮ মামলার চিহ্নিত আসামী আনারুল ম্যোলা বহাল তবিয়তে। একাধিক মামলা ও জামায়াত ক্যাডার হওয়ার পরও ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় অর্থলোভী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় এলাকার মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি, জমি দখল, মৎস্য ঘের লুটসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়েও রয়েছেন ধরাছোয়ার বাইরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের মালেক মোল্যার ছেলে আনারুল। সে উপজেলা জামায়াতের চিহ্নিত ক্যাডার। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে আনারুলের দাপটে এলাকার আওয়ামীলীগ কর্মীসহ সাধারণ নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা, সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক বাড়ি ছাড়া করা ও শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া বিগত ২০১৩ সালসহ বিভিন্ন সময়ে আওয়ামীলীগ সরকার উৎখাতের জন্য বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ ছিলো তার। এদিকে বিগত ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্র“য়ারি সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজের সামনে নাশকতা করার সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত তুয়ারডাঙ্গার সালাম উক্ত আনারুলের আপন চাচা। সে সময় আনারুল বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য বিভিন্ন নাশকতা মূলক কর্মকান্ড চালিয়েছিলো। এছাড়াও তারা সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াত শিবির ও বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এহেন কর্মকান্ড নেই যা এলাকায় সে করে না। সারাদেশে বিএনপি জামায়াত শিবিরের নৈরাজ্যের অংশ হিসাবে সাতক্ষীরা জেলাধীন আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর গ্রামে আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ আশরাফ ও ছাত্রলীগ নেতা মামুনকে জামায়াত শিবিরের ক্যাডার আনারুল (পিতা মালেক মোল্যা, সাং তুয়ারডাঙ্গা, আশাশুনি) বাহিনী কর্তৃক বোমা মেরে হত্যা করে।
ওই নেতাদের মদদে অত্র এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বিভিন্ন বর্বর নির্যাতন করারও অভিযোগ রয়েছে আনারুলের বিরুদ্ধে। রাতে সংখ্যালঘু পরিবারের সুন্দরী স্ত্রী ও যুবতীকন্যাদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করা আনারুলের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার। আনারুলের দস্যুতার এবং সংখ্যালঘু হওয়ায় তারা আনারুলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না।
অন্যদিকে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ প্রায় ২৮টি মামলা রয়েছে ওই আনারুল মোল্যার বিরুদ্ধে। মামলা গুলো হচ্ছে- আশাশুনি থানায় ২৯এপ্রিল ২০১৪ তারিখে হত্যা মামলা নং-২৩, ১মার্চ ২০১৩ তারিখে সাতক্ষীরা ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যা মামলা নং-৩, ৩০ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে মনোরায়া হত্যা মামলা নং- ২৩, ১৯জুলাই’২০০১ তারিখে আশাশুনি থানার ৩৯৫/৩৯৭ ডাকাতি মামলা নং- ০১, ২৩ ডিসেম্বর২০০১ তারিখে মামলা নং-২১, ১৩ ডিসেম্বর ২০০১ তারিখে আশাশুনি থানার ডাকাতি মামলা নং- ১৪, ১৮ মার্চ ২০০২ তারিখে আশাশুনি থানার মামলা নং-১৯, ২৯ ডিসেম্বর ১৯৯৯ তারিখে মটর সাইকেল ছিনতাই মামলা নং- ৫, ৯অক্টোবর ১৯৯৫ তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন বিশেষ আইনের মামলা নং-৮, ২৫ অক্টোবর ১৯৯৬ তারিখে আশাশুনি থানার মামলা নং-০৭, ১৯৯৩ সালের এস.টি.সি ১৮৫/৯৩ নং মামলায় ৫বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী, ১৯৯১ সালে ৪২/৯১ নং বোমা ও অগ্নি সংযোগ ও ঘের লুটপাট মামলার ৭ বছরের সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত আসামী, ৮জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে আশাশুনি থানার মামলার নং-৫, ১৬ ফেব্র“য়ারি২০১৩ তারিখে মামলা নং- ১৩, ২৩ ফেব্র“য়ারি২০১৬ তারিখে আশাশুনি থানার মামলা নং- ১৮, ২১এপ্রিল২০১৪ তারিখে মামলা নং- ১৭, ২৫ মার্চ’১৬ তারিখে আশাশুনি থানার মামলা নং-১৬, ২৯মার্চ২০১৬ তারিখে আশাশুনি থানার মামলা নং- ২৪, ৩১ মার্চ২০১৬ তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর অপহরণ মামলা নং- ৩১। ২৩ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে আশাশুনি থানার মামলা নং- ৩৮, ১২ জুলাই ২০১৬ তারিখে আশাশুনি থানার মামলা নং- ১৭, ২৯ আগস্ট২০১৪ তারিখে আশাশুনি থানার মামলা নং- ২৫। এতগুলো মামলা থাকা সত্বেও অজানা কারণে ওই কুখ্যাত চাঁদাবাজ ও চিহ্নিত জামায়াত নেতা আনারুল মোল্যার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
অপরদিকে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতার সহযোগিতায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ক্যাডার আনারুল আগামী নির্বাচন কে সামনে রেখে নাশকতা করার জন্য বিএনপি জামায়াত জোটের ক্যাডারদের একত্রিত করার পরিকল্পনা অব্যাহত রেখেছে। আর এ কারণে ওইসব ক্যাডারদের সমন্বয়ে বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠক ও সরকার বিরোধী প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষনি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে অত্র এলাকায় আবারো বিগত ২০১৩ সালের মত সরকার বিরোধী আন্দোলন সংঘঠিত হবে। অবিলম্বে ওই আনারুল মোল্যাকে গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।