বিদেশের খবর: মারিয়ার বয়স তখন ১৬। আর ম্যানিংয়ের ২৫। মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক নয়। বর-বউয়ের মধ্যে ১০ বছরের দূরত্ব। তা সত্ত্বেও মা মিশেল এক রকম জোর করেই বিয়ে দেন।
প্রথম বছরেই জন্ম নেয় প্রথম সন্তান। পড়াশোনা-চাকরি শিকেয় উঠে তার। পরিবারের দায়িত্ব পালনে হিমশিম খায় সে। মারিয়ার মতোই আরেক হতভাগী অ্যাঞ্জেল। বয়সে মারিয়ার চেয়েও ছোট।
সবেমাত্র ১৩ কোঠায় পা। বাবা-মা তাকেও বিয়ে দিয়েছে জোর করে। তার থেকে দ্বিগুণ বয়সী ছেলের সঙ্গে। ওই বয়সে সংসার শুরুর অনুভূতি অ্যাঞ্জেলের কাছে ছিল কৃতদাসীর মতো। তার কথায়, ‘আমার নিজেকে দাসী মনে হতো।
কোনো কিছুইতো আমার ইচ্ছা অনুযায়ী হতো না। উঠতে-বসতে ধমক। মাথায় সবসময় স্বামীর মন জুগিয়ে চলার চিন্তা। সামান্য একটু ভুল হলেই লঙ্কাকাণ্ড।’ এশিয়ার কোনো অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশের চিত্র নয় এটা।
বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নারী সমাজের দুই অন্ধকার জীবনের গল্প। অন্যান্য অঞ্চলে যখন বাল্যবিয়ের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তখন এ দেশটিতে তলে তলে এর ব্যাপক চল লক্ষ্য করা যায়।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, আফ্রিকার বহু দেশ যেমন জিম্বাবুয়ে, মালাবি এবং এল সালভেদরে সম্প্রতি বাল্যবিয়ে নিষিদ্ধ হয়েছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজ্যেই এখনও এটা বৈধ। যুক্তরাষ্ট্রের ২৫টি অঙ্গরাজ্যে বাল্যবিয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমাও নির্ধারণ করা নেই।
দেশটিতে গত ১০ বছরে আড়াই লাখ বাল্যবিয়ে হয়েছে। বাল্যবিয়ের শিকার এসব মেয়ের মধ্যে ১০-১১ বছর বয়সী শিশুও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ের জন্য সর্বনিম্ন বয়স ১৮ নির্ধারিত হলেও প্রতিটি রাজ্যে এ বিষয়ে কিছু কিছু ছাড় রয়েছে।
যেমন- বাবা-মায়ের সম্মতি বা গর্ভাবস্থাজনিত কারণে অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ের অনুমতি দেয় দেশটি। সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে দেশটিতে ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে অন্তত ২ লাখ ৪৮ হাজার বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটে।
১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে আড়াই লাখ বাল্যবিয়ে!
পূর্ববর্তী পোস্ট