মোস্তাফিজুর রহমান, আশাশুনি : আশাশুনি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ধান্যহাটি গ্রামের বহু সংখ্যালঘু পরিবার নাজমা বেগমের চড়া সুদের জালে জড়িয়ে নি:স্ব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়াগেছে। সর্বশান্ত পরিবার গুলোর মধ্যে ধান্যহাটি গ্রামের বাবলু অধিকারির স্ত্রী লতিকা অধিকারি একই গ্রামের রশিদ সরদারের স্ত্রী সুদী কারবারী নাজমা বেগমের নামে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
৭ ডিসেম্বর শুক্রবার লিখিত অভিযোগ থেকে জানাগেছে, দিন মুজুর লতিকা অধিকারি এবং তার স্বামী বাবলু অধিকারি অনু: ২ বছর পূর্বে প্রতিবেশির থেকে ৩ বিঘা জমির একটা ঘেরের ডিট নেয়ার জন্য নাজমা বেগমের থেকে একাধিক দফায় সুদে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা নেন। জামানত হিসাবে ১টি ৩৫০শত এবং ১টি ৫০০শত টাকার অলিখিত ২টি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প জমা রাখেন। বিগত ২ বছরে এককালিন ১ লক্ষ, পরবর্তিতে একই গ্রামের বিজন সরকারের হাত দিয়ে এককালিন ২ লক্ষ এবং বিভিন্ন সময়ে ৫, ১০, ১২ হাজার করে সর্ব মোট সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরেও সম্প্রতি নাজমা তার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প ফেরত না দিয়ে সুদ ও আসল মিলিয়ে আরও ৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দাবি করছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিবাদী লতিকার বাড়িতে এসে সুদের টাকা না পেয়ে গালিগালাজ করে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ১ সপ্তাহ সময় বেধে দিয়ে যায় এবং হুশিয়ারি করে যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা না দিলে ভিটে জায়গা জমি লিখে নেয়াসহ গরু ছাগল যা কিছু আছে বিক্রি করে টাকা উসুল করে নেবে। অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন ধান্যাহাটি গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, নাজমা বেগম শুধু লতিকা অধিকারিকে নয় নি:ম্ব করেছে বহু অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারকে। ধান্যাহাটি গ্রামের তারক সরকারের পুত্র আশুতোষ সরকার ও তার বড় ভাই সুখলাল সরকারের স্ত্রী নমিতা সরকার জানান, তিন বছর পূর্বে নাজমার থেকে দুই ভাই ৩৫ এবং ৩০ হাজার টাকা সুদে নেন। ৩ বছর কম-বেশি সুদের টাকা দেয় এবং তাদের মা যমুনা সরকারের নামীয় শেষ সম্বল ১৭ শতক ভিটে বাড়ির ১১শতক তাকে লিখে দেওয়ার পরও ২ ভাইয়ের কাছে ৪লক্ষ ও ৮লক্ষ মোট ১২ লক্ষ টাকা দাবি করছে।অনন্ত অধিকারির পুত্র তপন অধিকারি জানান, ২০ হাজার টাকায় ৭০ হাজার টাকা দেয়ার পরে আরও ৭০ হাজার টাকা দাবি করছে। ধর্মদাশ চক্রবর্তির পুত্র দেবব্রত চক্রবর্তি জানান, দেড় বছরে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় আড়াই লক্ষ টাকা দেয়ার পরে সম্প্রতি আরও ৬ লক্ষ টাকা দাবি করছে। মৃত বাসুদেব সরকারের পুত্র প্রেম কুমার সরকার জানান, দেড় বছরে ১ লক্ষ ৯ হাজার টাকায় দেড় লক্ষ টাকা দেয়ার পরে সম্প্রতি আরও ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দাবি করছে। উল্লেখ্য, প্রত্যেকের থেকে নাজমা বেগম জামানাত স্বরুপ অলিখিত নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন ব্যাংকের ব্লাংক চেক নিয়ে রেখেছে। অভিযুক্ত নাজমা বেগমের সাথে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি প্রতিবেদকের সাথে এ বিষয়ে কোন কথা বলেননি। আশাশুনি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার নাথ জানান, নাজমা বেগমের বিরুদ্ধে উল্লেখিত বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য একজন অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি।