নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাতক্ষীরার তালায় চিংড়ি ঘের করার জন্য জমি ইজারা দিতে রাজি না হওয়ায় এক প্রভাবশালী কর্তৃক জমির মালিককে মারপিট, খুন জখম ও মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তালার শেখপাড়া অচিমতলা গ্রামের হাশেম আলী মোড়লের ছেলে খায়রুল ইসলাম শুক্রবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা ৮০ জন জমির মালিক তালার খলিষখালী ইউনিয়নের কাটাখালি মৌজায় একদাগে প্রায় ১৭০ বিঘা জমি মৎস্য চাষ করার শর্তে হারির বিনিময় ২০১৩ সালে পাটকেলঘাটা এলাকার রফিকুল বিশ্বাসের ছেলে পলাশ বিশ্বাসের কাছে ইজারা প্রদান করি। চুক্তি অনুযায়ী তিনি বছরে একবার মৎস্য চাষ করবেন ও আমরা একবার ধান চাষ করবো এবং নদী সংষ্কার হলে আর ইজারা দিবো না। ইতিমধ্যে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আমিসহ অন্য জমির মালিকরা পলাশকে আর জমি ইজারা না দিয়ে নিজেরা চাষাবাদ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সে অনুযায়ী গত ১৫ ফেব্রুয়ারী সকল জমির মালিকদের নিয়ে বসাবসি করার জন্য এক জায়গায় জড়ো হতে থাকি। এসময় পলাশের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একটি বাহিনী দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মটরসাইকলে যোগে অকর্স্মিক ওই সভায় উপস্থিত হয়ে আমাকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। বাধা দিতে গেলে জমির মালিক শহিদুল ইসলামকে হাত পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিয়ে পলাশ বলতে থাকে আমাকেই জমি ইজারা দিতে হবে। না হলে ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে তোর নামে মামলা দিয়ে জেলে পাটাবো এবং অন্য জমির মালিকদের নাশকতার মামলা দিয়ে ভিটে ছাড়া করবো। এক পর্যায় অন্যান্য জমির মালিকরা পলাশের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করেন। এসময় পলাশ বলতে থাকে জমি আমাকেই দিতে হবে। আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন আমি জোর করে ওই জমিতে ঘের করবো।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টি স্থানীয় দুইজন জনপ্রতিনিধিকে জানালে তারা কোন ব্যবস্থা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে থানায় এজাহার দিতে বলেন। পরে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দিলে তিনি বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, আমরা বৈধ জমির মালিক হওয়া স্বত্বেও প্রভাবশালী পলাশের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছি। পলাশ বাহিনীর অত্যাচারে এলাকাবাসি অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। কেউ প্রতিবাদ করলে মারপিট ও মিথ্যে মামলা দিয়ে তাদেরকে দমিয়ে রাখে। ফলে তার ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। অবৈধ টাকার প্রভাবে পলাশ একই ভাবে তার পেটুয়া বাহিনীকে ব্যবহার করে আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে। তিনি প্রভাবশালী পলাশের হাত থেকে এলাকার সকল মালিকদের জমি উদ্ধার এবং পলাশ ও তার সহযোগিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জমির মালিক আব্দুল আজিজ মোড়ল, দেব কুমার মন্ডল, লিয়াকত আলী মোড়ল ও শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।