আব্দুল জলিল: কালিগঞ্জের রতনপুর ইউনিয়নের শিবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইস গেট দিয়ে ফের নোনা পানি তোলার পাঁয়তারা চলছে। স্থানীয় জনসাধারনের আপত্তি এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশনা লংঘন করে একটি প্রভাবশালী মহল নোনা পািন তুলে চিংিড়ি চাষের চেষ্টা করছে। এতে দশটি গ্রামের সাত কিলোমিটার এলাকার মওসুমী ফসল বিনষ্ট হবার আশংকা দেখা দিয়েছে। একই সাথে বহু সংখ্যক মিষ্টি পানির পুকুরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছও নিধন হবার আশংকা রয়েছে।
ভুক্তভোগী গ্রামবাসী এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে নতুন করে আবেদন করে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। পানি তোলা বন্ধ করতে তারা কালিগঞ্জ থানায়ও একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে তারা এখনও কোনো বাধার সৃষ্টি করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদনকারী কৃষক ইমান আলি সরদার ও হাবিবুর রহমান জানান আমরা দীর্ঘদিন যাবত মিষ্টি পানি ব্যবহার করে কৃষি ও মৎস্য চাষ করে আসছিলাম। সীমান্তের কালিন্দী নদী থেকে লবনাক্ত পানি তুলে শিবপুর স্লুইস গেট দিয়ে কলপলি খালের মধ্য দিয়ে একটি মহল নোনা পািন তোলা শুরু করেন। তারা এই পানি সাত কিলোমিটার দুরে খইতলা সোনাখালি খুবদিপুরের পূবের বিলে নিয়ে বাগদা চিংড়ি চাষ করছিলেন। এর ফলে স্থানী খড়মী, মলেঙ্গা, মুড়াগাছা, আবদুলখালি, মাদকাটি, গোয়ালপোতা, আড়ংগাছাসহ প্রায় ১০ টি গ্রাম নোনা পানির কবলে পড়ে। ফলে এসব গ্রামের কৃষি, মৎস্য ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ছাড়াও পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়তে থাকে। তারা বলেন এ বিষয়ে তারা কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের শরণাপন্ন হন। গ্রামবাসীর আবেদন অনুযায়ী তারা নোনা পািন তুলতে নিষেধ করেন। কিন্তু তাদের নির্দেশনা না মানায় গ্রামবাসী উচ্চ আদালতে রিট করেন। তিন বছর আগে হাইকোর্টের এক আদেশে নোনা পানি তুলবার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তারা জানান সেই থেকে কলপলি খাল দিয়ে নোনা পানি তোলা বন্ধ রয়েছে।
অভিযোগ করে ত্রাা আরও বলেন সম্প্রতি গোয়ালপোতা গ্রামের বাগদা চিংড়ি চাষী মনসুর সরদার ও জাহিদুন্নবী মুন্না, খুব্দিপুর গ্রামের আবদুল আলিম, নৈহাটি গ্রামের আফসার আলিসহ বেশ কয়েকজন বাগদা চিংড়িচাষী নতুন করে কলপলি খাল দিয়ে কালিন্দি নদীর নোনা পানি আনার চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে তারা পানি প্রবাহের জন্য ড্রেন ও খাল সংস্কারও করে রেখেছেন। তারা যে কোনো মূহুর্তে পানি তুলবেন বলেও ঘোষনা দিয়েছেন বলে জানান গ্রামবাসী। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন এই আশংকা ব্যক্ত করে পানি ্ উন্নয়ন বোর্ড ও কালিগঞ্জ থানার সহযোগিতা চেয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশনাল অফিসার (এসও) মো. ওবায়দুল্লাহ জানান ‘হাইকোর্টের নির্দেশনা পেয়ে আমরা পুলিশের মাধ্যমে পানি তোলা বন্ধ রেখেছি। এখন নতুন করে রাতের আঁধারে কেউ গোপনে স্লুইস গেট দিয়ে পানি তুললে বাধা দেওয়ার সুযোগ কমই। তবু আমরা আদালতের নির্দেশনা রক্ষার চেষ্টা করবো’।
কালিগঞ্জে আদালতের নির্দেশ লংঘন করে নোনা পানি তোলার পাঁয়তারা
পূর্ববর্তী পোস্ট